Search

আক্কেল দাঁত হলে করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক

  • 0
  • 2 views

লাইফস্টাইল ডেস্ক : 

মানুষের ৩২টি দাঁতের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই আক্কেল দাঁত। তবে এর সঙ্গে আক্কেল বা জ্ঞানবুদ্ধির কোনও যোগ নেই। ইংরেজিতে একে বলে উইজডম টিথ। অনেকে আবার মজা করে বলে থাকেন, আক্কেল দাঁত ওঠার অর্থ আক্কেল হয়েছে। কিন্তু ইনি যে ভীষণই যন্ত্রণাদায়ক সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই! অনেকেই আক্কেল দাঁতের সমস্যায় জর্জরিত! কোনও কোনও ক্ষেত্রে তো দাঁত তুলেও ফেলতে হয়। এছাড়া এই বিষয়ে আমাদের সবারই মনে একাধিক প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে।

আক্কেল দাঁত কেন ওঠে?আর ওঠার সময় এত ব্যথা কেন হয়?সবার কিন্তু আক্কেল দাঁত ওঠে না, সেটাই বা কেন? আক্কেল দাঁত ওঠে কেন?এই প্রশ্ন কখনও আপনার মাথায় এসেছে? আক্কেল দাঁত এবং তার কারণে ব্যথা, চেনা মহলে এমন কথা প্রায়শই শোনা যায়। আক্কেল দাঁতের সমস্যা কি গুরুতর? দাঁতের অন্য সমস্যার সঙ্গে এর কি সম্পর্ক রয়েছে? আক্কেল দাঁত নিয়ে ভয় না থাকলেও, সজাগ না হলে সংক্রমণ হতে পারে।

প্রথমে জানতে হবে আক্কেল দাঁত কী? আমাদের যে মোলার দাঁতগুলো থাকে, তার শেষ মোলার হল আক্কেল দাঁত বা উইসডম টুথ। মোলার দাঁতগুলি সবচেয়ে বড় আকারের দাঁত। খাবারের মণ্ডকে পিষে খাবার গিলতে সাহায্য করে মোলার দাঁত।

সাধারণত আঠেরো বছর বয়সের পরে আক্কেল দাঁত গজায়। তবে সময়ের সঙ্গে গ্রোথ প্যাটার্ন বদলে যাওয়ায়, ষোলো-সতেরো বছরেও এখন এই দাঁত হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার দোরগোড়ায় এমন দাঁতের জন্ম, যার অভিজ্ঞতা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুখকর নয়। তাই এমন দাঁতের নাম রাখা হয়েছে আক্কেল দাঁত বা উইসডম টুথ।

আক্কেল দাঁত সকলের হয় না। অনেকের হলেও ব্যথার উপসর্গ থাকে না। কিন্তু কেন হয় আক্কেল দাঁত? বিবর্তনের কারণে সাধারণত আক্কেল দাঁত বেরোনোর জায়গা থাকে না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে নীচের দাঁত পুরোপুরি না গজালেও, উপরের দাঁত বেরিয়ে যায়। নীচের আক্কেল দাঁত বেঁকা ভাবে গজালে, তা পাশের মোলার দাঁত নষ্ট করে দিতে পারে।

আর জায়গা না পেলেই আক্কেল দাঁতের ঠেলায় সে যে কী ব্যথা হয়, তা যাঁদের হয়েছে তাঁরা সকলেই জানেন। মুখ হাঁ করতে সমস্যা, মুখ ফুলে যাওয়া, খাবার খেতে-গিলতে সমস্যা, সঙ্গে দাঁত ব্যথা থেকে জ্বরও চলে আসে অনেকের।

আক্কেল দাঁত কী?

আক্কেল দাঁত হচ্ছে আমাদের দাঁতের পাটির একদম শেষ দাঁতটি, যেটা সব থেকে চওড়া, এবং সব থেকে শক্ত। এটা মূলত আমাদের কৈশোরের শেষ দিকে বা যৌবনের শুরুর দিকে গজায়। কারও কারও ক্ষেত্রে এটা অর্ধেক বেরিয়ে আর বেরোয় না, এবং মাড়িতে আটকে থেকে প্রচণ্ড ব্যথা দেয়। আর এর কারণে মাড়িতে ইনফেকশন হয়, দাঁতে পোকা লেগে যায় এবং একাধিক মুখের সমস্যা হয়। তাই আক্কেল দাঁত পুরো মা উঠলে, ব্যথা দিলে সেটা সবসময় তুলে ফেলা উচিত বলেই দাঁতের ডাক্তাররা মনে করেন।

কী কী লক্ষণ থাকে?

শেষের দাঁতে খুব ব্যথা হয়।
জায়গাটা ফুলে যেতে পারে।
মাড়ি থেকে রক্ত বের হতে পারে
শ্বাসে দুর্গন্ধ থাকতে পারে ইত্যাদি।

কখন আক্কেল দাঁত তুলে ফেলা উচিত?

যদি আপনার আক্কেল দাঁত আপনার জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, কিংবা ভবিষ্যতে এর থেকে সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন এটাকে তুলে ফেলা উচিত। তবে দাঁত তোলার আগে চিকিৎসকরা একাধিক বিষয় যাচাই করে নেন, এই যেমন এই দাঁতের কারণে কী অন্য দাঁতগুলোর সমস্যা হচ্ছে? মুখের ভিতর অন্যান্য সমস্যা তৈরি করছে? সার্জারি করলে কী বা কেমন জটিলতা তৈরি হতে পারে, ইত্যাদি। এগুলো বিবেচনা করার পরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে সার্জারির প্রয়োজন আছে কিনা।

আক্কেল দাঁত তুলে ফেললে কি কোনও জটিলতা তৈরি হতে পারে?

দাঁত তোলার পরই অনেকের মুখ বা মাড়ি ফুলে যায়, ব্যথা হয়। তবে সেটা দীর্ঘস্থায়ী নয়। যদি ব্যথাটা থেকেই যায় বা ফিরে আসে তাহলে সেক্ষেত্রে অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলেই সমস্যা দূর হবে।

আক্কেল দাঁত কেন বেদনাদায়ক?

প্রথমত এই দাঁত মাড়ির নিচে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। এতে করে মাড়ি ফুঁড়ে বের হওয়ার সময় ব্যথা অনুভূত হয়। এসময় মাড়ি ফুলে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া মুখে সবগুলো দাঁত ধারণ ক্ষমতার জায়গা না থাকলে আক্কেল দাঁত ওঠার সময় প্রচণ্ড ব্যথা হয়। অনেক সময় অপারেশন করে মাড়ি কেটে দাঁত বের করতে হয়। শধু তাই নয়, মাঝে মাঝে আক্কেল দাঁত মাড়ির নিচে এমন জটিল অবস্থায় থাকে, যা পার্শ্ববর্তী দাঁতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

পরিত্রানে ঘরোয়া উপায়

ক্রমাগত ব্যথা হলে কিংবা কিছুতেই ব্যথা না কমলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে ঘরোয়া উপায়ে ব্যথা নিরাময়ের চেষ্টা করা যায়। কারণ দাঁত উঠে গেলে ব্যথা আপনাআপনি কমে যাবে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী চলুন পরিত্রান পাওয়ার কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

নুন জল:

হালকা গরম জলে নুন মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। এতে দাঁতের গোড়ায় থাকা ব্যাকটিরিয়ার বাড়বাড়ন্ত কমে। ফলে আক্কেল দাঁত যেখানে উঠছে, সেই জায়গায় কোনও সংক্রমণ থাকলে, তা কমে যায়। তা ছাড়া এতে মাড়ির ব্যথারও কিছুটা উপশম হয়।

লবঙ্গ:

দাঁতের ব্যথায় লবঙ্গ খুবই কার্যকর। মুখের মধ্যে ব্যথার এলাকায় একটি লবঙ্গ দাঁতে করে চেপে রাখতে হয়। এই লবঙ্গের রস আক্রান্ত জায়গাটিতে মেশে। সেখানকার সংক্রামক ব্যাকটিরিয়ার মৃত্যু তো হয়ই, একই সঙ্গে ব্যথাও কমে।

ঠান্ডা-গরম সেঁক:

দিনের মাথায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ঠান্ডা-গরম সেঁক দেওয়া যেতে পারে বাইরে থেকে। একটি তোয়ালেতে বরফ নিয়ে ঠান্ডা সেঁক দিলে ব্যথা কমবে। গরম সেঁক দিলে রক্ত চলাচল বাড়বে। ফলে ব্যথার দ্রুত উপশম হবে।

আইস প্যাক দিন :

মনে রাখবেন, এই সমস্যায় আপনি আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। বরফ দিলে সেই জায়গাটা অসাড় হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি ব্যাগে বরফ নিন। তারপর সেই ব্যাগটি গালের উপর থেকে মাড়িতে লাগান। এভাবে ১৫ মিনিট রাখতে পারলেই আরাম পাবেন।

টি ব্যাগ :

টি ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিইনফ্লামেশন গুণ রয়েছে। ফলে ব্যাকটেরিয়া মরে যায়। এমনকী মাড়ির ফোলাও কমে।

পুদিনার রস :

ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে প্রাকৃতিক উপানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী পুদিনা। এই উপাদনটির রস খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

অ্যালোভেরা :
আক্কেল দাঁত যেখানে উঠেছে সেখানে অ্যালোভেরা জেল লাগালে প্রশান্তি পাওয়া যাবে। মাড়ির লাল ভাব কমে যাবে।

আক্কেল দাঁত তুলে ফেলার পর ব্যথা হলে কী করবেন দেখে নিন।

১. ডাক্তারের দেওয়া ওষুধের সঙ্গে বরফের সেঁক দিন মাড়িতে।

২. গরম পানীয়, ফলের রস খাবেন না দাঁত তোলার পর। এরয়ে চলবেন ধূমপানও। এতে জটিলতা বাড়ে।

৩. সহজেই চিবিয়ে খাওয়া যায় এমন খাবার খান, যেমন মাছ, আলু ইত্যাদি। হালকা গরম খাবার খান। খুব গরম খাবেন না একদমই।

৪. সার্জারির পর কদিন একদম বেশি শারীরিক কসরত করবেন না, এটা মাড়িতে ফের ব্যথা হতে পারে।

সর্বোপরি, সঠিক সময় সঠিক চিকিৎসা করান। ব্যথা হলে ফেলে রাখবেন না।

 

ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই ভাই নিহত
Prev Post ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই ভাই নিহত
আঁচিল দূর করুন ঘরে বসেই
Next Post আঁচিল দূর করুন ঘরে বসেই

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *