গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। শিশুরাই হবে আসল স্মার্ট, তারাই দেশ চালাবে। আমরা একসময় চাঁদেও যাব, সবাইকে এখন থেকে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে।
শনিবার (৬ জুলাই) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিমডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন ও ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট বেলা থেকেই মানুষের জন্য আলাদা একটা দরদ ছিল। অন্নহীন, ছিন্ন কাপড় পরিহিত মানুষ, থাকার জায়গা নেই, এই জিনিসগুলো তাঁকে খুব ব্যথিত করতো। সেজন্য ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের জন্যই কাজ করতেন। নিজের জীবনের কোনও সুখ, সুবিধা কিছুই দেখেননি। শুধু একটাই চিন্তা ছিল এদেশের মানুষকে কীভাবে দারিদ্রের হাত থেকে মুক্তি দেবেন। কীভাবে একটা উন্নত জীবন দেবেন। ছোট্ট শিশুরা যাতে একটা সুন্দর জীবন পেতে পারে সেটাই তাঁর লক্ষ্য ছিল।
সরকারপ্রধান বলেন, আমি মনে করি আজ যে উদ্যোগ এখানে নেওয়া হয়েছে অথবা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যেসব শিশু, তাদের আঁকা ছবি দিয়ে অ্যালবাম করা বা ছবির মাধ্যমে ইতিহাসকে যে তুলে ধরা, আসলে ছবিতো কথা বলে এবং এর মাধ্যমে শিশুদের ইতিহাস জানার সুযোগ হচ্ছে।
তিনি এই উদ্যোগের জন্য শিক্ষক, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। শেখ হাসিনা বলেন, আর আমার ছোট্ট সোনামনি, তোমাদের জন্য দোয়া ও আশির্বাদ রইল। তোমরা লেখাপড়া শিখে বড় হও। কারণ যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো তোমরাই হবে তার স্মার্ট নাগরিক যারা দেশ চালাবে। তোমাদের মাঝ থেকেই বের হয়ে আসবে আমার মতো প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী। তোমরা বড় বড় জায়গায় যাবে, গবেষণা করবে, বিজ্ঞানী হবে। আর আমরা একসময় চাঁদেও যাব। কোনও চিন্তা নেই। কাজেই সবাইকে এখন থেকে সেভাবে প্রস্ততি নিতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেখানে লেখাপড়া করেছেন, সেই স্কুলে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছালে শিক্ষার্থীরা তাকে স্বাগত জানায়। শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন। তিনি সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার ঘুরে দেখেন, যেখানে জাতির ওপর রচিত বিভিন্ন বই রাখা হয়েছে।
এসময় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর চাচা শেখ কবির হোসেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাজমা আক্তার, প্রধানমন্ত্রীর আসনের উন্নয়ন প্রতিনিধি মো. শহীদ-উল্লা-খন্দকার, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. বাবুল শেখ, পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচি শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়িতে যান। সেখান থেকে পূর্ব নির্ধারিত সফরসূচি সংক্ষিপ্ত করে দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে সড়ক পথে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন।
এর আগে, আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি ফাতেহা পাঠ করেন। তিনি জাতির পিতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী তার দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি শেখ সাহেরা খাতুনের কবরেও দোয়া করেন।