লাইফস্টাইল ডেস্ক :
আমাদেরকে প্রাণবন্ত ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে সকালের নাস্তা। দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা, নাস্তা না খেয়ে অফিসের জন্য ছোটা, এ যেনো আমাদের নিত্যদিনের অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। অনেকেই ঘুম থেকে ওঠে সকালে না খেয়ে দিনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দেন। এই অভ্যেস ভবিষ্যতের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হতে পারে, সেটা আমাদের কল্পনারও বাইরে। অনেকেই ভাবেন সকালের নাশতা খেলে ওজন ভেড়ে যায়।
সকালের খাবার খেলে অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আবার এটি শরীরের শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে এছাড়াও, নিয়মিত সকালের নাস্তা করলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে অবশ্যই সেটি হতে হবে পুষ্টিকর। সকালের দিকে শরীরের বিপাকক্রিয়ার হার বেশি থাকে ফলে যা খাওয়া হয় তা হজম হয়ে যায়।
বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, সকালের নাশতা হতে হবে যাকে বলে একদম ব্যালেন্স ডায়েট, যা থেকে ভিটামিন, চর্বি, খনিজ—সব আনুপাতিক হারে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি সকালের নাশতা ঠিকমতো খাওয়া হলে দুপুর পর্যন্ত খিদে লাগবে না। অহেতুক আজেবাজে খাওয়াও বন্ধ হবে।
জাপানের জার্নাল অফ হিউম্যান সায়েন্সেস অফ হেলথ-সোশ্যাল সার্ভিসেস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে খালি পেটে থাকার কারণে বেশিরভাগ মানুষ ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়ার অসুখে ভুগছেন। ৫২৫ জন প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে ছয় বছর ধরে চলা ওই গবেষনা বলছে, যারা সকালে নাস্তা না করে কাজে বের হন, তারা অন্যদের তুলনায় চার গুণ বেশি স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার অসুখে ভোগেন।
প্রতিদিন সকালে সঠিক সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের ফলে স্মৃতিশক্তি ভালো থাকার পাশাপাশি সুস্থ থাকবে শরীর ও মন, জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।
ডিম
ডিম দারুণ পুষ্টিকর এক খাবার। সকালে ডিমের যেকোনো একটি পদ খেয়ে নিন। সেদ্ধ হলে আরও ভালো, এতে কোনো তেল লাগে না।
গোটা শস্যের পাউরুটি
সাদা পাউরুটি নয়, গোটা শস্যের বাদামি পাউরুটি খেতে পারেন। সঙ্গে খেতে পারেন বাদামের মাখন, তাতে আমিষের চাহিদাও মিটবে, আর পাবেন‘ভালো’ ধরনের স্নেহজাতীয় উপাদান।
স্যান্ডউইচ
এই পাউরুটি দিয়েই তৈরি করতে পারেন স্যান্ডউইচ। মুরগির মাংস বা ডিমের স্যান্ডউইচ দারুণ নাশতা। সবজি দিয়েও হতে পারে স্যান্ডউইচ। স্যান্ডউইচের জন্য লো ফ্যাট পনির বেছে নিন। স্যান্ডউইচে মেয়োনেজ দেবেন না যেন।
ওটস
সকালে ওটস খেতে পারেন। ওটস দিয়ে খিচুড়ি হতে পারে, আবার ওটসের সঙ্গে ফলও মেশাতে পারেন। ওটসে আমিষ আর আঁশ দুটোই পাবেন।
ফলের সালাদ
ফলের রসের চেয়ে গোটা ফল খেলেই পুষ্টি পাবেন বেশি। আঁশসমৃদ্ধ ফল খেলে সহজে ক্ষুধাও পাবে না। সালাদ ড্রেসিং করতে পারেন টক দই দিয়ে।
আলু ছাড়া সালাদ
খানিকটা লবণাক্ত স্বাদ না পেলে আবার কারও কারও চলে না। তাঁরা সবজির সালাদ খেতে পারেন। সালাদে মুরগির মাংস বা ডিমও দিতে পারেন। নানা রকম মসলা দিতে পারেন।
কলা
রোজ হয়তো একটা কলা খান। সকালেই সেই কলাটি খেয়ে নিতে পারেন। সারা দিনের কাজের জন্য অনেকটা শক্তি পাবেন।
ফলের স্মুদি
চিনি ছাড়া স্মুদিও খেতে পারেন। সাদামাটা স্মুদিই স্বাস্থ্যকর। ক্রিমজাতীয় উপকরণ ব্যবহার করবেন না।
টোফু
উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আমিষ গ্রহণ করতে চাইলে টোফু বেছে নিতে পারেন। এতেও কিন্তু সহজে ক্ষুধা পায় না।
কফি বা গ্রিন টি
কফি খেতে পারেন। কিংবা গ্রিন টি। সতেজ বোধ করবেন। আবার বিপাক ক্রিয়া বাড়ায় ওজন কমানোও সহজ হবে। তবে চিনি অবশ্যই বর্জনীয়।