Search

কানাডার স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস ডেস্ক

  • 0
  • 2 views

স্পোর্টস ডেস্ক : 

কোপা আমেরিকার এবারের আসরে শুরু থেকেই দাপুটে ফুটবল খেলছে আর্জেন্টিনা। গ্রুপপর্বের বাঁধা পেরিয়ে নক-আউট রাউন্ডেও দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের ধারা বজায় রেখেছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেমিফাইনালে কানাডাকে উড়িয়ে দিয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। শেষ চারের লড়াইয়ে নেমে শুরুতেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা এগিয়ে যায় জুলিয়ান আলভারেজের গোলে। এরপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে গোলের দেখা পেয়েছেন মেসিও। মহাদেশীয় এ টুর্নামেন্টের এবারের আসরে এটিই আর্জেন্টাইন অধিনায়কের প্রথম গোল। ওদিকে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে সমানতালে লড়াই করার চেষ্টায় থাকলেও একবারও জালের দেখা পায়নি কানাডা।

বুধবার (১০ জুলাই) সকালে নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠে আসা কানাডাকে ২-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। মেসি এই ম্যাচে গোলের খাতা খোলার পাশাপাশি জুলিয়ান আলভারেজের গোলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ম্যাচেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল।

২০১৫ সাল থেকেই কোপা আমেরিকার ফাইনালে নিয়মিত মুখ আর্জেন্টিনা। মাঝে বাদ গিয়েছিল শুধু ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকা। যেবারে সেমিফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল আলবিসেলেস্তেদের। এরপর ২০২১ সালে শিরোপাটাই জয় করে তারা। এবার তাদের সামনে সুযোগ টানা দুইবার কোপা আমেরিকা জয়ের। যে জয় পেলে ফুটবলের বিরল এক রেকর্ডে নাম উঠবে আর্জেন্টিনার।

দুই মহাদেশীয় আসর আর এক বিশ্বকাপ টানা জয়ের কীর্তি এর আগে আছে কেবল স্পেনের। ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালের ইউরো জয় করেছিল স্পেন। এবার সেই সুযোগ আর্জেন্টিনার সামনে। আগামীকালের উরুগুয়ে ও কলম্বিয়া ম্যাচের জয়ী দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে ফাইনালে নামবে লিওনেল মেসির দল।

কোপার ইতিহাসের রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার এটি ৩০তম ফাইনাল। সবশেষ আট আসরের ৬টি ফাইনালেই উঠেছে আলবেসেলেস্তেরা। আগামী ১৫ জুলাই ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মেসিদের প্রতিপক্ষ হবে উরুগুয়ে-কলম্বিয়া ম্যাচের জয়ী দল। এই দুই দলের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল ৬টায়।

দ্বাদশ মিনিটে নিজেদের প্রথম বড় সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। ডান পাশ থেকে দি মারিয়ার পাসে বল পেয়ে যান মেসি। ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার বাম পায়ের শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে!

কানাডার দুটি ব্যর্থ প্রতি আক্রমণের পর ২৩তম মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে রদ্রিগো দে পলের থ্রু বল দারুণ প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নেন আলভারেস। চ্যালেঞ্জ জানাতে আসা ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে তিনি খুঁজে নেন জালের ঠিকানা।

চলতি কোপা আমেরিকায় দ্বিতীয় ও সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে আলভারেসের এটি নবম গোল।

২৬তম মিনিটে বাম পাশে ফ্রি-কিক পায় কানাডা। আলফুঁস ডেভিসের বাম পায়ের ক্রসে হেড করতে পারেনি কেউ। ৩৪তম মিনিটে ডান পাশ থেকে বারের ওপর দিয়ে মারেন দি মারিয়া। পরের মিনিটে মেসির পাসে তাগলিয়াফিকোর শট ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। পরে সেই কর্নার থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি লিসান্দ্রো মার্তিনেস।

১০ মিনিট পর আরেকটি সুযোগ পান মেসি। ডান পাশ থেকে দি মারিয়ার পাসে বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শট নেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। এবারও অল্পের জন্য পোস্ট ঘেঁষে চলে যায় বল। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডি-বক্সের মুখে অনেকটা ফাঁকায় পান মেসি। কিন্তু তার চিপ শট চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। পরের মিনিটে জন্সটনের থ্রো-ইন থেকে আচমকা শট নেন ডেভিড। কাছ থেকে ঠকিয়ে দেন তৎপর আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেস।

দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা কমে আর্জেন্টিনার আক্রমণের ধার। তবে প্রথম জোরাল আক্রমণেই জাল খুঁজে নেয় তারা। জটলা থেকে বল ক্লিয়ার করার চেষ্টায় ডি-বক্সের মুখে এনসো ফের্নান্দেসকে দিয়ে দেন কানাডার এক ডিফেন্ডার। চেলসি মিডফিল্ডারের তীব্র গতির শটে খুব কাছ থেকে বাম পা ছুঁয়ে একটু দিক পাল্টে জালে পাঠান মেসি।

চলতি কোপা আমেরিকায় এটিই আর্জেন্টিনা অধিনায়কের প্রথম গোল। সবমিলিয়ে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে চতুর্দশ। এনিয়ে কোপা আমেরিকার ভিন্ন ছয় আসরে জালের দেখা পেলেন আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ ১০৯ গোলের মালিক।

৬১তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ ছিল আলভারেসের সামনে। দি মারিয়ার থ্রু বল ডি-বক্সের কাছে ফাঁকায় পেয়ে যান তরুণ ফরোয়ার্ড। কিন্তু তিনি শট নেন একদম গোলরক্ষক ম্যাক্সিম ক্রেপু বরাবর।

পরের মিনিটে আক্রমণে ওঠে কানাডা। আলি আহমেদের পাস থেকে পাওয়া বল বারের ওপর দিয়ে মারেন ইসমাইল কোনে। ৭৫তম মিনিটে ফের আর্জেন্টিনার রক্ষণ ভীতি জাগায় তারা। তবে জটলার মধ্যে সুবিধা করতে পারেনি অতিথি দলটি।

শেষ দশ মিনিট উজ্জীবিত ফুটবল খেলে গোলের জন্য মরিয়া কানাডা। ৮৯তম মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে তানি ওলুয়াসেইর পায়ের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় ঠেকান এমিলিয়ানো। পরের মিনিটে অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে যায় তানির হেড। জাল অক্ষত রেখে ফাইনালে ওঠার আনন্দে মাতে আর্জেন্টিনা।

শেষ চারের লড়াইয়ে কানাডার বিপক্ষে ম্যাচের ৫১ শতাংশ সময় বল নিজেদের দখলে রেখেছিল আর্জেন্টিনা। গোলে মেসি-আলভারেজরা শট নিয়েছিলেন মোট ১১টি যার ২টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ৪৯ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখে কানাডাও নিয়েছিল ৯টি শট যার ২টি ছিল লক্ষ্যে, তবে শেষ পর্যন্ত গলের দেখা না পাওয়ায় পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। অন্যদিকে দাপুটে এক জয়ে টানা দ্বিতীয়বার কোপা ফাইনাল নিশ্চিত করল আলবিসেলেস্তেরা।

ঢাকা-বেইজিং ২১ চুক্তি ও ৭ ঘোষণাপত্র সই
Prev Post ঢাকা-বেইজিং ২১ চুক্তি ও ৭ ঘোষণাপত্র সই
পানিশূন্যতা তৈরি করে যেসব খাবার
Next Post পানিশূন্যতা তৈরি করে যেসব খাবার

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *