Search

কেন খাবেন আখের রস

লাইফস্টাইল ডেস্ক

  • 0
  • 4 views

লাইফস্টাইল ডেস্ক : 

গরমে শরবত হিসেবে আখের রস সবারই খুব পছন্দের। এসময় এর চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যায়। এটি শুধু পিপাসাই মেটায় না, বরং এর ব্যাপক ঔষধি গুণও রয়েছে। যা বেশিরভাগ মানুষই জানেন না।
আখের রসের উপকারিতার বিষয়ে ভারতীয় এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ডিহাইড্রেশনের সমস্যা এড়াতে আখের রস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পানীয়। এতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ যেমন- জিংক, ফসফরাস, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।

তিনি বলেন, পুষ্টিগুণে ভরপুর এই আখের রস স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কেউ যদি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে চান তাহলে আখের রস পান করলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া যায়। এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে ক্লান্তি দূর করে এবং মেজাজ ভালো রাখে।

আখের রস ফ্লবোনয়েড নামক একটি বিশেষ উপাদানের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এই উপাদানটি আপনাকে ক্যানসার থেকে দূরে রাখবে। আখ চিবিয়ে খেলে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এ ছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত করে। আখের রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ইউরিনারি ট্র্যাকের সংক্রমণ রুখতে সহায়তা করে আখের রস।

গরমে শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন হয়। পানির অভাবে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। শরীরে পানিশূন্যতা দূর করতে আখের রস খুবই ভালো। আখের রস দামেও সস্তা এবং সহজলভ্য। শরীরের জন্য উপকারী উপাদানে ভরপুর আখের রস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে।

বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের আখের রস খুব একটা বেশি খাওয়া ভালো না। কারণ অধিকাংশ সময় আখের রসে অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টির ভাগ থাকে। এর ফলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে জন্ডিস রোগীদের ক্ষেত্রে আখের রস এক ঔষধি গুণসম্পন্ন উপাদান।

আখের রসের স্বাস্থ্যগুন

আখের রসকে দুটি সাধারণ চিনি, ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজে বিভক্ত করে প্রক্রিয়া করে শরীর। ফলে এনার্জি বাড়ে আখের রস খেলে। গরমের ক্লান্তি দূর করতে দারুণ সহায়ক আখের রস। এটি ডিহাইড্রেশন রোধ করে।

আখের রস লিভারের জন্য উপকারী। জন্ডিসের রোগীদের আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় আরোগ্য লাভের জন্য। পানিজাতীয় খাবার আখের রস খেলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া দূর হয় ও কিডনি ভালো থাকে। আখ চিবিয়ে খেলে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এছাড়া এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত রাখে। আখের রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নানা ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

পুষ্টিবিদ বলেন, এক গ্লাস (২৪০ মিলি) আখের রসে ১৮০ ক্যালরি খাদ্যশক্তি, ৩০ গ্রাম চিনি এবং এতে খাদ্য আঁশ ও বেশি থাকে। আখের রসে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ জলীয় অংশ, ১৩ থেকে ১৫ শতাংশ সুক্রোজ এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ খাদ্য আঁশ থাকে। এছাড়াও এতে এন্টি অক্সিডেন্ট, কোলেস্টেরল হ্রাসকারী উপাদান এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ আছে। আখের রসের অন্যতম উপাদান শর্করা। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক সারাদিন যে পরিমাণ খাবার খান, তাতে থাকা শর্করার মাত্রা মিলিয়ে যেন ৩০ গ্রামের বেশি না হয়। ৭ থেকে ১০ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে সেই মাত্রাটা হওয়া উচিত ২৪ গ্রাম মতো। তাই একসঙ্গে দুই গ্লাসের বেশি আখের রস পান করলে তা উপকারের বদলে ক্ষতির কারণ হতে পারে।

ত্বক ও চুল ভালো রাখতে : বিশেষজ্ঞদের মতে আখের রসে থাকে ম্যাগনেশিয়াম, আয়রনসহ একাধিক খনিজ পদার্থ। ত্বক ও রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখতে এই খনিজ পদার্থগুলোর গুরুত্ব অনেক। পাশাপাশি আখের রসে থাকে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, যা ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে, কমায় ব্রণের সমস্যা। মাথার খুশকির সমস্যা কমাতেও এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

সংক্রমণ কমাতে : আখের রস ‘ডাইইউরেটিক’। ফলে শরীর থেকে একাধিক বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। লিভার ভালো রাখতেও আখের রস খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। বিশেষ করে জন্ডিস আক্রান্ত রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থতায় আখের রস খুব উপকারি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

প্রজনন সমস্যার সমাধান : আধুনিক গবেষণা বলছে, নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রজননের নানা সমস্যার সমাধানে বেশ কার্যকর হতে পারে আখের রস। গবেষণা বলছে, পুরুষদের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে ও মহিলাদের সন্তান প্রসবে সহায়তা করে আখের রস। এমনকি, স্তনদুগ্ধ নিঃসরণেও আখের রস সহায় হয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে : আখে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানে প্রধান হাতিয়ারই হলো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার।

কিডনি ভালো রাখে : আখের রসে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুব বেশি নয়। এমনকি এতে সোডিয়াম ও অসম্পৃক্ত স্নেহ পদার্থও প্রায় থাকেই না। ফলে এই পানীয় কিডনির ওপর চাপ কমায়।

তবে উপকার পেতে টাটকা রস খাওয়া বেশি দরকার। রাস্তার পাশে আগে থেকে রেখে দেওয়া রস না খাওয়াই ভালো।

প্রাককথন: নানাবিধ কাজের চাপে দৈনন্দিন জীবনে আমরা হাপিয়ে উঠি প্রায়শ। শরীরকে চাঙ্গা রাখাতে আখের রস খুবই উপকারী একটি পানীয়। এই পানীয়টিতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, উপকারি অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থিয়ামিন এবং রাইবোফ্লেবিন, যা শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে স্ট্রেসের কারণে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই না, সেই সঙ্গে আরও একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন-

প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত সমস্যা দূরে করে: আখের রসে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড মেয়েদের শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা দূরে থাকতে বাধ্য হয়। সেই সঙ্গে বাচ্চার শারীরিক উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। এই কারণেই তো গর্ভাবস্থায় নারীদের নিয়মিত আখের রস খাওয়া পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

দেহের প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আখের রস খাওয়া শুরু করলে শরীরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। বিশেষত সেনসরি অর্গেন, রিপ্রাডাকটিভ অর্গেন এবং ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আয়ুও বাড়ে চোখে পরার মতো। এবার নিশ্চয় বুঝেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুস্থভাবে বাঁচতে আখের রস খাওয়ার প্রয়োজন কতটা।

ডায়াবেটিসের মতো রোগ দূরে থাকে: গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে একেবারে তলার দিকে থাকার কারণে আখের রস খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। বরং এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই তো ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম খরে আখের রস খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে ডায়াবেটিকদের একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে আখের রস খাওয়া উচিত। কারণ জেনে নেওয়া উচিত এই রসটি খেলে তাদের শরীরে অন্য় কোনও সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে কি-না!

কনস্টিপেশনের মতো রোগ দূর পালায়: আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, আখের রসে উপস্থিত ল্যাক্সেটিভ প্রপাটিজ বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমতে সময়ই লাগে না। সেই সঙ্গে আখে থাকা অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কিডনির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, আখের রসে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের মতো সমস্যা দূর করতেও সাহায্য় করে। প্রসঙ্গত, কিডনি ফাংশনকে ঠিক রাখতেও আখের রসের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

এনার্জির ঘাটতি দূর হয়: সারা দিন অফিস করে কি বেজায় ক্লান্ত হয়ে পরেছেন? তাহলে ঝটপট এক গ্লাস আখের রস খেয়ে ফেলুন। দেখবেন একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবেন। আসলে আখের ভিতরে থাকা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়াম এবং অন্য়ান্য় উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এনার্জির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন এবং শরীর, দুইই চনমনে হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, আখের রস শরীরের ভিতরে প্লাজমা এবং বডি ফ্লইডের ঘাটতি মেটায়। এভাবেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে তোলে।

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: নানা কারণে কি গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আজ থেকেই আখের রস খাওয়া শুরু করে দিন। দেখবেন হজম ক্ষমতা একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আসলে এই প্রকৃতিক উৎপাদনে উপস্থিত পটাশিয়াম, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে হজমে সহায়ক একাধিক পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।

লিভারের ক্ষমতা বাড়ে: আয়ুর্বেদ শাস্ত্র সম্পর্কিত একাধিক বইয়ে এমন উল্লেখ পাওয়া যায় যে লিভারকে সুস্থ রাখতে আখের রস দারুন কাজে আসে। সেই কারণেই তো জন্ডিসের প্রকোপ কমাতে রোগীকে আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। শুধু তাই নয়, শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি প্রোটিনের চাহিদা মেটাতেও আখ বিশেষ ভূমিকা নেয়।

ক্যানসারের মতো মারণ রোগ দূরে পালায়: সম্প্রতি হওয়া বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আখের রস খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে ফ্লবোনয়েড নামক একটি বিশেষ উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই উপাদানটি ক্যানসার সেলেদের ধ্বংস করে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই বর্তমানে যে হারে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে প্রায় সবারই যে প্রতিদিন আখের রস খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, সে বিষযে কোনও সন্দেহ নেই!

খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে: হাই কোলেস্টেরলের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই আখের রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে থাকা বেশ কিছু উপাদান খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সাহায্য করে।

মুখ গহ্বরের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকার কারণে নিয়মিত আখের রস খেলে হাড় শক্তপোক্ত তো হয়ই, সেই সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়।

ব্রণের চিকিৎসায় কাজে আসে: আখের রসে উপস্থিত আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড স্কিন সেলের উৎপাদন বাড়ায়ে ব্রণের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ব্রণের দাগ কমাতেও সাহায্য করে থাকে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো আখের রস নিয়ে মুলতানি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্ট ভাল করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ভেজা তোয়ালের সাহায্যে ভাল করে মুখটা পরিষ্কার করে নিতে হবে।

টানা বৃষ্টির অজুহাতে আবারো বেড়েছে সবজির দাম
Prev Post টানা বৃষ্টির অজুহাতে আবারো বেড়েছে সবজির দাম
মার্টিনেজ বীরত্বে কোপার সেমিতে আর্জেন্টিনা
Next Post মার্টিনেজ বীরত্বে কোপার সেমিতে আর্জেন্টিনা

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *