Search

ক্যান্সারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

  • 0
  • 5 views

লাইফস্টাইল ডেস্ক : 

ক্যান্সারের নাম শুনলেই বেশিরভাগ মানুষ যেটি মনে করেন তা হচ্ছে, এটি একটি মারাত্মক রোগ যাতে আক্রান্তরা মারা যান। কিন্তু ৭০ এর দশকের পর থেকে ক্যান্সারে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার তিনগুণ বেড়েছে। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা করানোর কারণে।

বাস্তবে, বেশিরভাগ ক্যান্সারই চিকিৎসা যোগ্য এবং যেসব রোগীরা খুব মারাত্মক পর্যায়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পান তারা একটি ভাল ফলও পান।

অনেক সময় আমরা ছোটো-খাটো উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চাইনা বা সেগুলোকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেই না। এসব উপসর্গকে আমরা এড়িয়ে চলি যা আসলে প্রাথমিক অবস্থায় ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

যুক্তরাজ্যের ক্যানসার গবেষণা সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা জীবনের কোন না কোন সময়ে এমন কোন উপসর্গে ভুগেছেন যেটি আসলে ক্যান্সারের উপস্থিতি জানান দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু মাত্র ২ শতাংশ মনে করেছেন যে এর কারণে তাদের ভুগতে হতে পারে এবং এক তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ একে কোন ধরনের পাত্তাই দেননি এবং এর ফলে চিকিৎসকের কাছেও যাননি।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একজন গবেষক এবং এই ক্যান্সার গবেষণার প্রধান ক্যাটরিনা হুইটেকার বলেন, আপনার যদি এমন কোন উপসর্গ থাকে যেটা সহসাই যাচ্ছে না, বিশেষ করে এমন সব উপসর্গ যেগুলোকে হুঁশিয়ারি সংকেত হিসেবে মনে করা হয়, তাহলে সেগুলোকে অবহেলা না করে আপনার চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত এবং তার সহায়তা চাওয়া উচিত।

কারণ ছাড়া ওজন কমে যাওয়া : ক্যান্সার আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই কোন না কোন সময় ওজন হারাতে শুরু করে। যখন আপনি কোন ধরনের কারণ ছাড়াই ওজন হারাতে শুরু করেন, এটাকে বলা হয় ব্যাখ্যাহীন ওজন হারানো। এতে চিন্তার কারণ আছে। ব্যাখ্যাহীনভাবে বা কোন কারণ ছাড়াই পাঁচ কেজি বা তার বেশি ওজন কমলে সেটি ক্যান্সারের প্রথম লক্ষণ হতে পারে। অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, খাদ্যনালী বা ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ওজন কমে যাওয়ার এই লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

জ্বার : ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। অবশ্য যে স্থানে ক্যান্সার উৎপন্ন হয়েছে সেখান থেকে দেহের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে তখন প্রায়ই জ্বর দেখা দেয়। ক্যান্সারে আক্রান্ত সবাই কোন না কোন সময় জ্বরে ভোগেন। বিশেষ করে যদি ক্যান্সার বা এর চিকিৎসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে তাহলে জ্বর বেশি হয়।

অতিরিক্ত কাশি : এই ক্যানসারের সবচেয়ে সাধারণ ও গুরুতর লক্ষণ হলো কাশি। যারা ধূমপায়ী নন তাদেরও এ লক্ষণটি দেখা দেয়। একই সঙ্গে হাঁপানি, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও ফুসফুস সংক্রমণের লক্ষণ। পাশাপাশি রক্ত কাশিও হতে পারে। যা ক্যনসারের মারাত্মক লক্ষণ।

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের মধ্যে মূত্রনালির সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে প্রসাবে জ্বালা-পোড়া, ঘন ঘন প্রসাব হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এসব লক্ষণ সাধারণভাবে নেবেন না, কারণ এটি হতে পারে প্রোস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ।

ঠান্ডা বা গলা ব্যথা : গলায়, বগলসহ শরীরের বেশ কয়েকটি স্থানে শিমের বীজের মতো গ্রন্থি থাকে। যখন এসব গ্রন্থি কোনো কারণে ফুলে ওঠে তখন আপনি ঠান্ডা বা গলা ব্যথায় ভুগতে পারেন। কিছু ক্যানসার যেমন লিম্ফোমা ও লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রেও এ ধরনের ফোলাভাব হতে পারে।

ক্লান্তি : এখানে ক্লান্তি বলতে বোঝায় চরম ক্লান্তিভাব যা বিশ্রাম নেয়ার পরও দূর হয় না। ক্যান্সার বাড়ার সাথে সাথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গ হিসেবে দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু ক্যান্সার যেমন লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রে শুরুর দিকেই ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। কিছু কোলন বা মলাশয় ও পাকস্থলীর ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে তবে এটা সবক্ষেত্রে হয় না। এর কারণেও ক্যান্সারের সময় ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

অন্ত্রের ক্রিয়া বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন : কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা আপনার মলের আকারে দীর্ঘদিন ধরে পরিবর্তন মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, প্রস্রাবে রক্তপাত, বা মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন যেমন আগের তুলনায় কম বা বেশি প্রস্রাব করা ইত্যাদি মূত্রাশয় বা প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

যে ক্ষত ভাল হয় না : অনেকেই জানেন যে দেহে যদি কোন আঁচিল থাকে যেটি বাড়ে বা ব্যথা হয় বা সেটি থেকে রক্তপাত হয় তাহলে সেটি ত্বকের ক্যান্সারের একটি লক্ষণ হতে পারে। কিন্তু শরীরে যদি কোন ক্ষত থাকে যেটি চার সপ্তাহের পরও ভাল হয় না বা সেরে যায় না, এমন ক্ষতের প্রতিও আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত। মুখে যদি এমন কোন ক্ষত হয় তাহলে সেটি মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। আপনার মুখের যেকোন পরিবর্তন যদি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন চিকিৎসক বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেয়া উচিত। শিশ্ন বা জরায়ুতে ক্ষত হয় কোন ধরণের সংক্রমণ কিংবা ক্যান্সারের প্রাথমিক অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। এমন অবস্থায় একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ নেয়া উচিত।

মুখে ঘা : অনেকেরই মুখে সাদা, লাল দাগ বা ঘা হয়ে থাকে। যা সহজে সারতে চায় না। বিশেষ করে যদি আপনি ধূমপান করেন তাহলে এমন ঘা অবহেলা করবেন না। হতে পারে এটি মুখের ক্যানসারের লক্ষণ। একই সঙ্গে যদি চোয়াল নাড়তে সমস্যা হয় বা মুখে ব্যথা ও দুর্গন্ধ হয়ে থাকে তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

রক্তপাত : ক্যান্সারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় কিংবা তা ছড়িয়ে পড়ার পর অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। কাশির সাথে রক্তপাত ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে যদি মলের সাথে রক্তপাত হয় তাহলে এটি মলাশয় বা মলদ্বারে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এনডোমেট্রিয়াম বা জরায়ুর আবরণে সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের কারণে যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত হতে পারে। এছাড়া মূত্রের সাথে রক্ত পড়লে সেটি মূত্রাশয় বা কিডনি ক্যান্সারের কারণে হতে পারে। স্তনবৃন্ত বা স্তনের বোটা থেকে রক্ত-মিশ্রিত তরল বের হলে সেটি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

গিলতে অসুবিধা : ক্রমাগত বদহজম বা কোন কিছু গিলতে গেলে সমস্যা হলে সেটা ইসোফ্যাগাস, পাকস্থলী বা গলার ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তবে যাই হোক না কেন, এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত সব উপসর্গই ক্যান্সার ছাড়াও অন্য আরো অনেক কারণেই দেখা দিতে পারে।

টানা কাশি বা কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন : টানা কাশি ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এছাড়া কণ্ঠস্বরে পরিবর্তন আসলে তা স্বরযন্ত্র বা থাইরয়েড গ্রন্থিতে ক্যান্সারের উপস্থিতি নির্দেশ করতে পারে।

যে কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়
Prev Post যে কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়
পা ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়
Next Post পা ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *