Search

খেজুরের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

  • 0
  • 5 views

পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফলের নাম খেজুর। দেখতেও যেমন সুন্দর স্বাদেও তেমন অতুলনীয়। খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়।

 

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, আয়রন, ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়ামসহ নানান পুষ্টিগুণ। এসব খাদ্য উপাদান শরীরে অতীব প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে যখন আপনার বয়স পৌঁছাবে ৩০-এর কোঠায়।

 

এ সময় মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণক্ষমতা কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, আমাদের কর্মশক্তি হ্রাস, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, পেশির সমস্যা, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি, হিমোগ্লোবিনের অসামঞ্জস্যতা, হজমে সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাড় ক্ষয়, ত্বকের নানা সমস্যা হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়।

 

খেজুরে রয়েছে নানাবিধ সব উপকার। যা শরীরের জাদুর মতো কাজ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক খেজুরের উপকারিতা-

 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা দূর করে। তুলনামূলকভাবে যেসব খেজুর একটু শক্ত সেই খেজুর সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকাংশে দূর হয়। এছাড়া মুখের লালাকে ভালোভাবে খাবারের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করে খেজুর। ফলে আমাদের বদহজম অনেকাংশে দূর হয়।

 

মস্তিষ্ক সচল রাখে: খেজুরের সব চেয়ে বড় গুণ হলো এই ফলটি মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে। আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির জোগান দিতে সক্ষম এই পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু ফলটি।

 

দৃষ্টিশক্তি প্রখর: খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। যেমন: বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫। এ ছাড়া ভিটামিন এ১ এবং সিসহ নানা ভিটামিনের পাওয়ার হাইস বলতে পারেন খেজুরকে। এটি দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই বেশি বয়সে চোখের সমস্যা তাড়াতাড়ি আনতে না চাইলে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

 

ত্বকের যত্ন: বয়সের ছাপ প্রথমে ত্বকেই ধরা পড়ে। তাই ত্বকের যত্নে খেজুর কাজে লাগাতে পারেন। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচায়। ত্বকের নানা সমস্যা থেকেও খেজুর মুক্তি দেয়। ত্বকের বলি রেখা নিয়ন্ত্রণ করতেও খেজুর সিদ্ধহস্ত। এ ছাড়া ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব ও হরমোনের সমস্যা কমাতে খেজুর কার্যকর।

 

ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন কমানোর জন্য খেজুর খুবই কার্যকরী। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি ক্ষুধা কমায় এবং অতিরিক্ত খাওয়া এড়ায়। আমরা যখন নিয়ন্ত্রণে খাই তখন ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

 

শক্তি বর্ধনে: খেজুর শারীরিক ও মানসিক শক্তিবর্ধক। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদান, যা শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিসহ হজম শক্তি, যৌনশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। খেজুর ফুলের পরাগরেণু বন্ধ্যাত্ব দূর করে, শুক্রাণু বৃদ্ধি করে। খেজুর ও খেজুরের ফুল পরাগরেণু ডিএনএ’র গুণগতমান বৃদ্ধি করে এবং অণ্ডকোষের শক্তি বাড়ায়।

 

গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারী: খেজুর গর্ভবতী নারীদের জন্য দারুণ উপকারী। খেজুরে থাকা আয়রন নারীদের রক্তে ভরপুর করে। খেজুর ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ, যা গর্ভবতী নারীদের জন্য অপরিহার্য। গর্ভবতী নারীরা সহজেই ১-২টি খেজুর খেতে পারেন।

 

হিমোগ্লোবিন বাড়ায়: খেজুরে ভালো পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়, যা শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়। শরীরে রক্তসরবরাহ করে। খালি পেটে খেজুর খেলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বেড়ে যায়।

 

হার্টের সমস্যা দূর করে: যাদের হার্টের সমস্যা আছে, তাদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী। কেননা খেজুর দুর্বল হার্টকে মজবুত করতে সক্ষম করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে হার্টের সমস্যায় কিছু দিনের মধ্যে উপকার পাবেন। হৃদরোগ কমাতেও খেজুর বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়: খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকায় এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে, সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ছাত্রছাত্রী যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভালো থাকে। তাই বেশি বয়সে স্মৃতিশক্তি লোপ করতে না চাইলে বয়স ৩০ হলেই খেজুর খেতে শুরু করে দিন।

 

হজম ও রুচি বাড়ায়: রুচি বাড়াতে খেজুরের কোনো তুলনাই হয় না। শিশুদের যারা ঠিকমতো খেতে চায় না, তাদেরকে নিয়মিত খেজুর খেতে দিলে রুচি ফিরে আসে। খেজুরের মধ্যে রয়েছে স্যলুবল এবং ইনস্যলুবল ফাইবার ও বিভিন্ন ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা সহজে খাবার হজমে সহায়তা করে।

 

ক্যান্সার থেকে রক্ষায়: খেজুর বিভিন্ন ক্যান্সার থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে খেজুর লাংস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার থেকে শরীরকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।

 

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায়: খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং খুব অল্প পরিমাণে সোডিয়াম। এতে করে প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস দেহের খারাপ কলেস্টোরল কমায় এবং ভালো কলেস্টোরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।

 

এছাড়াও উচ্চমাত্রার শর্করা, ক্যালরি ও ফ্যাট সম্পন্ন খেজুর জ্বর, মূত্রথলির ইনফেকশন, যৌনরোগ, গনোরিয়া, কণ্ঠনালির ব্যথা বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে খেজুর বেশ উপকারী। খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে। নারীর শ্বেতপ্রদর ও শিশুর রিকেট নিরাময়ে খেজুর বেশ কার্যকর। খেজুরে থাকা ডায়েটরই ফাইবার দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। নিয়মিত খেজুর খেলে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। খেজুর দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে বিশেষভাবে সহায়ক। প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস রাতকানা রোগ ভালো করতে সাহায্য করে থাকে। মুখের অর্ধাঙ্গ রোগ, পক্ষঘাত এবং সব ধরনের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশকারী রোগের জন্য উপকারী।

দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া উপায়
Prev Post দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া উপায়
ভ্রু ঘন করার উপায়
Next Post ভ্রু ঘন করার উপায়

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *