নিজস্ব প্রতিবেদক :
খাল ও সড়কের জায়গা দখল করে রাখায় মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রোর দখল করা অবৈধ অংশ। অভিযানের কারণে খাল ও সড়কের জায়গায় অবৈধভাবে দখল করে রাখা অস্থায়ী কিছু স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে সাদিক অ্যাগ্রোর লোকজন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান শুরু হয়। অভিযান পরিচালনা করছেন ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান। অভিযানে ডিএনসিসির এক্সেভেটর ও বুলডুজারসহ বিশেষ যান দিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অভিযানে ডিএনসিসির অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পরিচ্ছন্নতা কর্মী অংশ নিয়েছেন। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন।
অভিযানের শুরুতে খালের অংশে দখলে থাকা অস্থায়ী স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাদিক অ্যাগ্রো ছাড়াও বেশ কিছু অস্থায়ী স্থাপনা এখানে গড়ে উঠেছিল, সেগুলোও উচ্ছেদ করছে ডিএনসিসি। মূলত খালের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছিল সাদিক অ্যাগ্রোর খামার। দখলের কারণে মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খাল সাদিক অ্যাগ্রোর অংশে একটি নালাতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি সড়কের জায়গাও দখল করেছে তারা। মূলত সেই কারণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে ডিএনসিসি।
অভিযান প্রসঙ্গে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ বলেন, খাল ও সড়কের জায়গা উদ্ধারে আমরা অভিযান শুরু করেছি। এর আগে বেশ কয়েকবার তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা আমলে নেয়নি। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
সাদিক অ্যাগ্রোর জায়গার একাংশ আব্দুর রশীদ তালুকদার নামে এক ব্যক্তির বলে দাবি করেন তার ভাই আব্দুল আলীম তালুকদার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এখানে সাদিক অ্যাগ্রোর কোনো জায়গা নেই। তারা ভাড়াটিয়া। ১০ বছর আগে তাদের জায়গা ভাড়া দিয়েছি।
আব্দুল আলীম তালুকদার বলেন, কয়েক বছর আগেও ডিসি অফিস, ভূমি অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ডও এই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। তখন আমাদের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর মধ্যে আমার সাড়ে চার শতক। মাসে ২৫ হাজার টাকা ভাড়া দেয়।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, সাদিক অ্যাগ্রো অবৈধভাবে খাল ও সড়কের জায়গা দখল করে আছে। তাই সাদিক অ্যাগ্রোকে উচ্ছেদ করতে বুধবার (২৬ জুন) প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স মোতায়েন চেয়ে ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে এক চিঠি দেওয়া হয়। ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহে আলম এই চিঠিতে সই করেন।
সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক গবাদিপশুর খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি ইমরান হোসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা উত্তর সিটির সম্পত্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, খালের ওই অংশে অবৈধ দখলদার সাদিক অ্যাগ্রোর বিষয়টি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আগেই জানতো। এখন ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসায় এই উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএনসিসি। যদিও ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরানের সখ্য রয়েছে। ঈদুল আজহার আগে ১২ জুন ঢাকা উত্তর সিটির নগর ভবনে অনুষ্ঠিত কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ছবিতে মেয়র আতিকুল ইসলামের পাশে তাকে দেখা গেছে।