লাইফস্টাইল ডেস্ক :
গরম পড়তে শুরু করেছে। এই গরমে ঘামাচি আর ঘামের সমস্যায় ভুগতে শুরু করছেন অনেকেই। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকেই প্রসাধনী সামগ্রী কিনছেন। কিন্তু বাজারে কিনতে পাওয়া প্রসাধনী অনেক ক্ষেত্রেই ত্বকের জন্য উপকারী নয়। বরং তা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর বলেই অভিমত অনেক ত্বক বিশেষজ্ঞের। এ বিষয়ে হেলথডিরেক্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গরমে সচরাচর পতঙ্গের কামড় ত্বকের নানা সমস্যার কারণ। তবে এই সময় অসুস্থ হলে তার নেপথ্যে ত্বকে ঘামাচি ও ত্বকে প্রদাহের সম্পর্ক থাকে বেশি।
ঘামাচি কেন হয়?
ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। লোমকূপ দিয়ে ঘাম বের হয়। ঘামে থাকা লবণের জন্য লোমকূপ যদি বন্ধ হয়ে যায়, ঘাম শরীর থেকে বের হতে না পেরে ত্বকে ঘামাচি তৈরি করে। অতিরিক্ত গরমে বড়-ছোট সবারই ঘামাচি হতে পারে। তাই ঘামাচি হওয়ার আগেই সচেতন থাকতে হবে।
শরীর থেকে ঘামাচি দূরে রাখার উপায়
বডিওয়াশ ব্যবহার করুন
গরমে গোসলের বিকল্প নেই। দুই থেকে তিনবার গোসল করুন। এতে ত্বক ঠান্ডা থাকবে। গোসলের সময় খুব বেশি সুগন্ধযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না। হালকা বডিওয়াশ ব্যবহার করা ভালো। এতে ত্বকে পিএইচ ব্যালান্স বজায় থাকবে। প্রতিবার গোসলের পর অন্তর্বাসসহ পোশাক বদলে ফেলুন।
ঢিলেঢালা পোশাক পরুন
গরমের সময় টাইট বা ফিটিং পোশাক পরা থেকে বিরত থাকুন। শরীরে যেন বাতাস প্রবেশ করতে পারে, সেজন্য ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। টাইট পোশাক পরলেই ত্বকে সংক্রমণ দেখা দেবে। মনে রাখবেন, ত্বকের যেসব স্থানে বেশি ঘাম হয় সেসব স্থানগুলো যাতে পরিষ্কার ও খোলামেলা থাকে। তাহলেই ঘামাচি বা ফুসকুড়ি উঠবে না।
বরফ সেঁক
গোসলের আগে প্রতিবার ত্বকের আক্রান্ত স্থানে বরফের সেঁক নিতে পারেন। এতে জ্বালা-পোড়াভাব ও চুলকানি কমবে। একটি তোয়ালের মধ্যে কিছু বরফ নিয়ে পুরো শরীরে কিছু সময়ের জন্য সেঁক নিতে পারেন।
চন্দন
চন্দন ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধে জাদুকরী ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, চন্দন কাঠের গুঁড়ায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যানালজেসিক আছে। যা ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ করে। পাশাপাশি আক্রান্ত স্থানের জ্বালা-পোড়াভাব কমায়। চন্দনের গুঁড়া সঙ্গে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখ, গলাসহ আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে পারেন।
মুলতানি মাটির প্যাক বানান
চার টেবিল চামচ মুলতানি মাটির নিন। এবার এই মাটিতে পরিমাণ মতো গোলাপ জল মিশিয়ে ঘামাচির ওপর লাগান। শুকানোর অপেক্ষা করুন। সবশেষে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে উপকার পাবেন।
বেকিং সোডা
বেকিং সোডা ব্যবহারে ত্বকের চুলকানি বা প্রদাহ মুহূর্তেই কমে। এটি ত্বকের সংক্রমণ রোধে দুর্দান্ত একটি ঘরোয়া প্রতিষেধক। পানির সঙ্গে কয়েক টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে গোসল করুন। এভাবে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর শরীরে পরিষ্কার পানি ঢেলে গোসল সম্পন্ন করুন।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরার নির্যাস ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-সেপটিক উপাদান আছে। যা ত্বক ঠান্ডা করে সংক্রমণ কমায়। ত্বকের অস্বস্তি দূর করতে আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরার রস ব্যবহার করতে পারেন।
নিমপাতা
নিমপাতা খুব ভালো অ্যান্টিসেপটিক। নিমের তেল, নিমপাতা বাটা দু’টোই খুব ভালো কাজে দেয় চুলকানির সমস্যায়। এজন্য এক বালতি পানিতে এক মুঠো নিমপাতা ভিজিয়ে রোদে রাখুন কিছুক্ষণ। গোসলের পর এ পানি শরীরে ব্যবহার করুন।
টেলকম পাউডার
গরমে সবাই কমবেশি টেলকম পাউডার ব্যবহার করে থাকেন। এটিও ত্বকের জন্য উপকারী। বিশেষ করে ত্বককে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া থেকে বাঁচায় পাউডার। অবশ্যই সুগন্ধহীন পাউডার ব্যবহার করতে হবে। বগল, কুচকি, ঘাড়, বুকে অর্থাৎ শরীরের ঢেকে রাখা স্থানগুলোতে পাউডার ব্যবহার করতে হবে।
ক্যালামাইন লোশন
ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে পারেন, যদি আপনার ত্বক অনেক সংবেদনশীল হয়ে থাকে। এ লোশনের মধ্যে জিং অক্সাইড আছে। যা ত্বকের তুলকানি ও প্রদাহ কমায়। তুলায় করে ক্যালামাইন লোশন ত্বকের আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করলে সানট্যান থেকে শুরু করে ফুসকুড়ি, ঘামাচিসহ সব সমস্যা দূর হবে। যে কোনো ওষুধের ফার্মেসি থেকে এ লোশন কিনে ব্যবহার করতে পারেন।