লাইফস্টাইল ডেস্ক :
লম্বা চুল সবাই পছন্দ করে। তবে লম্বা চুলের জন্য বাড়তি যত্ন নিতে হবে। খাবার তালিকায় রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবার, ভিটামিন ও খনিজ যা চুলকে মজবুত করে। চুল প্রাকৃতিকভাবেই মজবুত, কালো ও ঘন করতে চাইলে নির্দিষ্ট কিছু খাবার। জেনে নিন সেগুলো কী কী।
গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। ফলে গাজর চোখের জন্য খুব ভাল। শুধু চোখ নয়, মাথার তালুর পুষ্টির জন্য আর চুলের গোড়া শক্ত করতেও গাজরের কোনো বিকল্প নেই। রোজ একটি করে কাঁচা গাজর খেতে পারলে ভাল।
মটরশুঁটি গীষ্মকালে বাজারে মটরশুঁটি পাওয়া দুর্লভ। তবে খুঁজলে পাওয়া যেতেই পারে। চুল পড়ার সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে মটরশুঁটি উপকারী। এতে নানা রকমের ভিটামিনের সঙ্গে আছে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন, জিঙ্কের মতো কিছু খনিজ। এগুলো চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। চুলে পড়ে যাওয়া কমায়।
বাদাম খান নিয়মিত। চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোটে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। বিশেষ করে ওমেগা ৬ ফ্যাট রয়েছে বাদামে যা চুলের গোড়া শক্ত রাখতে সাহায্য করে। এই ফ্যাটটি আমাদের শরীর জিন থেকে তৈরি করতে পারে না। এই ফ্যাটের অভাবে আমাদের চুল পড়ে যায়। তাই প্রতিদিনের নাস্তায় কিছু বাদাম রাখতে পারেন। তবে বেশি পরিমাণে খাবেন না। বেশি খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
হলুদ ও কমলা রঙের সবজি এবং ফল রাখুন পাতে। যেমন গাজর, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, আমে রয়েছে ভিটামিন এ। চুলের ফলিকল অর্থাৎ যেখান থেকে চুল বড় হয় সেটা কাজ করার জন্য এই ভিটামিনের প্রয়োজন।
তৈলাক্ত মাছ খান বেশি করে। সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি দেশি মাছ যেমন ইলিশ, কৈ, চাপিলা, মলাতেও ওমেগা থ্রি ফ্যাট রয়েছে। এগুলো চুল ঘন ও কালো করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি প্রোটিনের ভালো উৎস মাছ।
চুল ভালো রাখার জন্য ডিম খান অবশ্যই। আমাদের চুল প্রায় পুরোটাই প্রোটিনের তৈরি। খাবারে প্রোটিনের অভাব হলে চুল পড়ে যায়। ডিম প্রোটিনের দারুণ উৎস। প্রোটিনের পাশাপাশি এতে মেলে বায়োটিন, সেলেনিয়াম ও ভিটামিন বি ১২। এগুলো চুল ঘন, কালো ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
পালং শাক চুলের ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায়। এতে চারটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, আয়রন ও ফলিক। এগুলো সবই আমাদের সুন্দর চুলের জন্য জরুরি।
চুল পড়া কমিয়ে চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে চাইলে পাতে ডাল রাখুন। ডালে প্রোটিন ও আয়রন আছে। আয়রন আমাদের মাথার তালুতে রক্ত সরবরাহ করে আমাদের চুলের গোড়ায় অক্সিজেন পৌঁছাতে সাহায্য করে। এছাড়া জিংক ও ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায় ডাল থেকে যা আমাদের চুল ভালো রাখে।
বিভিন্ন ধরনের বীজ খান নিয়মিত। চিয়া সিড, মিষ্টি কুমড়ার বিচি, সূর্যমুখীর বীজ ও তিসির বীজ খান চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে। চিয়া সিডে আছে এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড, মিষ্টি কুমড়ার বীজে আছে জিংক, সূর্যমুখীর বীজে আছে বায়োটিন ও তিসির বীজে আছে সেলেনিয়াম। এগুলো আমাদের চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
ছোলা খান চুল ভালো রাখতে। চুলের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আয়রন, জিংক ও প্রোটিন মেলে ছোলায়। এই তিন উপাদানের অভাবে আমাদের চুল পড়তে পারে।
টক দই প্রোটিনের চমৎকার উৎস। এতে পর্যাপ্ত জিংকও মেলে। তাই প্রতিদিন টক দই খাওয়ার অভ্যাস করুন।
খাদ্য তালিকায় রাখুন টক ফল। কমলা, লেবু ও টক ফলে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিন আমাদের সুন্দর চুলের জন্য জরুরি। ভিটামিন সি এর অভাবে চুল পেঁচিয়ে যায়। এছাড়া এই ভিটামিনের অভাবে শরীর আয়রন শোষণ করতে পারে না। ফলে চুল পড়ে যায়।
ওটস চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে। এতে আয়রন, জিঙ্ক, মিনারেলসের মতো উপাদান তো আছেই, তার সঙ্গে রয়েছে ওমেগা-৩। এই উপাদান ত্বক এবং চুলের পুষ্টি জোগায়। চুল ঝরার পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে আসে।
চুলের গোড়া শক্তিশালী ও মজবুত করে তুলতে আমলকির জুড়ি মেলা ভার। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ আমলকি চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করে। রোজ একটি করে আমলকি খাওয়ার অভ্যাস চুল ঝরা রোধ করতে দ্রুত সাহায্য করে।
