Search

টাইব্রেকারে ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিতে উরুগুয়ে

স্পোর্টস ডেস্ক

  • 0
  • 6 views

স্পোর্টস ডেস্ক : 

কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই, কিন্তু প্রথমার্ধ তো বটেই পুরো ম্যাচেই কোনো গোল করতে পারেনি ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। অথচ ৭৪ মিনিটে মিডফিল্ডার নাহিতাস নান্দেজ লাল কার্ড দেখায় উরুগুইয়ানরা দশজনের দলে পরিণত হয়। কিন্তু সেই সুযোগও কাজে লাগাতে ব্যর্থ দরিভাল জুনিয়রের ব্রাজিল। শেষপর্যন্ত গোলশূন্য ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে এডার মিলিটাও এবং ডগলাস লুইসের দুটি ব্যর্থ শটে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ব্রাজিলের, বিপরীতে সেমিফাইনালে উঠেছে উরুগুয়ে।

মূলত টাইব্রেকারের স্নায়ুচাপ সামলাতে পারেনি ব্রাজিল। সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই নিজেদের ছন্দ খুঁজে ফেরা দলটি লাস ভেগাসের অ্যালিগায়েন্ট স্টেডিয়ামেও ভিন্ন কিছু করতে পারেনি। দরিভাল জুনিয়র অল্প সময়ে দলটিকে গুছিয়ে তোলার আভাস দিলেও, ফিনিশিং ও মাঝমাঠে তাদের দুর্বলতা টের পাওয়া গেছে হাড়ে হাড়ে। যার সমাপ্তি ঘটিয়ে টাইব্রেকারে উরুগুয়ে জিতেছে ৪-২ গোলে।

প্রথম টাইব্রেকার শট নিতে আসেন ফেদে ভালভার্দে। কোনো ভুল করেননি তিনি। বামপ্রান্তে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অ্যালিসন বেকারও। কিন্তু বলের নাগাল পাননি। ব্রাজিল প্রথম শটটাই মিস করে, এদের মিলিতাওয়ের শট ফিরিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সের্হিও রোচেত। উরুগুয়ে দ্বিতীয় শটেও সফল হয়। আন্দ্রেস পেরেইরা ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন দ্বিতীয় শট নিতে এসে।

তৃতীয় শটেও গোল পায় উরুগুয়ে, ব্রাজিল আবার মিস করে। ফলে অনেকটা ছিটকেই যায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু অ্যালিসন উরুগুয়ের চতুর্থ শট ফিরিয়ে ব্রাজিলের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লিও হতাশ করেননি। কিন্তু পঞ্চম শট নিয়েই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেয় উরুগুয়ে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় ব্রাজিল।

ম্যাচে কার্ড জটিলতায় মাঠের বাইরে ছিলেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী তরুণ স্ট্রাইকার এন্দ্রিক ফেলিপ। বড় ম্যাচে তার ভূমিকা দেখার অপেক্ষায় ছিল ব্রাজিলভক্তরা, তবে মাঠের খেলায় তিনি সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি তিনি।

২০১১ সালে সবশেষ শিরোপা জেতার চার আসর পর আবার শেষ চারের টিকেট পেল রেকর্ড ১৫ বারের শিরোপাজয়ীরা। আর কোয়ার্টার-ফাইনালেই থেমে গেল গত দুই আসরের ফাইনালিস্ট ব্রাজিলের যাত্রা।

ম্যাচে ৬০ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখলেও আক্রমণের ঝাঁজ দেখাতে পারেনি ব্রাজিল। ৭টি শট করে ৩টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে ৯ গোল করা উরুগুয়েও পারেনি সেরা ছন্দের ছাপ রাখতে। পুরো ম্যাচে গোলের জন্য ১২টি শট করলেও মাত্র ১টি ছিল লক্ষ্যে।

৭৪তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে নাহিতান নান্দেস মাঠ ছেড়ে গেলে বাকি সময়টুকু একজন কম নিয়েই খেলতে হয় উরুগুয়েকে। বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে আক্রমণভাগে শক্তি বাড়িয়েও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল।

ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়মিত ব্রাজিলের রক্ষণে হানা দেয় উরুগুয়ে। কিন্তু তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। উল্টো কিছুটা সময় নিয়ে গুছিয়ে ওঠার পর উরুগুয়ের তুলনায় ব্রাজিলের আক্রমণগুলোই মনে হচ্ছিল বেশি ধারাল।

ত্রয়োদশ মিনিটে বাম প্রান্তে ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। রাফিনিয়ার শট রক্ষণ দেয়ালে লেগে চলে যায় বাইরে। ৫ মিনিট পর কর্নার থেকে পাওয়া বলে দূর পাল্লার শট নেন মানুয়েল উগার্তে। মার্কিনিয়োসের মাথায় লেগে পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায় বল!

২৭তম মিনিটে ব্যাক পাসে ডি বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান এন্দ্রিক। কিন্তু শট না নিয়ে তিনি টোকা দেন রাফিনিয়ার উদ্দেশ্যে। ছুটে এসে বল ক্লিয়ার করেন উরুগুয়ের এক ডিফেন্ডার। ৩৩তম মিনিটে চোট পেয়ে মাঠে কিছুক্ষণ শুশ্রূষা নেন রোনাল্দ আরাউহো। কিন্তু খেলা চালিয়ে নিতে পারেননি বার্সেলোনা ডিফেন্ডার। চোখে জল নিয়ে মাঠ ছাড়া আরাউহোর জায়গায় মাঠে আসেন অভিজ্ঞ হিমেনেস।

কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর খেলা শুরু হলে নান্দেসের ক্রস পেনাল্টি স্পটের কাছে দারুণ উচ্চতায় পান দারউইন নুনেস। কিন্তু লক্ষ্যে থাকেনি তার হেড। পরের মিনিটে লুকাস পাকেতার হেডে মাঝ মাঠ থেকে বল ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন রাফিনিয়া। তার ডান পায়ের শট বাম হাত বাড়িয়ে ঠেকান উরুগুয়ের গোলরক্ষক।

পরে যোগ করা সময়ে রাফিনিয়ার আরেকটি শট থামান রোচেত। প্রথমার্ধে দুই দল মিলিয়ে শুধু এই দুটি শটই ছিল লক্ষ্যে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে। ৫৩ মিনিটেই দুইবার গোলচেষ্টা চালায় তারা। প্রথমটি রুখে দেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। পরেরটি চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে। ৬৮ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাস পাকেতার একটি আক্রমণ ব্লক করে দেয় উরুগুয়ের রক্ষণভাগ।

৭২ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে বাজে ফাউল করে লালকার্ড দেখেন উরুগুয়ে ডিফেন্ডার। উরুগুয়ের অর্ধে বল নিয়ে আক্রণে যাচ্ছিলেন রদ্রিগো। এমন সময় পেছন থেকে এসে রদ্রিগোকে থামানোর জন্য পায়ে আঘাত করেন নন্দেজ। এতে প্রথমে তাকে হলুদকার্ড, পরে ভিএআর দেখে লালকার্ড দেখানের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে।

উরুগুয়ে ১০ জনের দলে পরিণত হলেও সুবিধা আদায় করে নিতে পারেনি ব্রাজিল। অথচ তখন ম্যাচের বাকি ১৫ মিনিট। শেষ পর্যন্ত খেলা টাইব্রেকারে গড়ালে হারই হজম করতে হয় দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যদের।

বাংলাদেশ সময় আগামী বৃহস্পতিবার সকালে সেমি-ফাইনালে উরুগুয়ের প্রতিপক্ষ শেষ আটে পানামাকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়া কলম্বিয়া। ফাইনালের টিকেট পেতে অন্য ম্যাচে লড়বে আর্জেন্টিনা ও কানাডা।

 

রোববার ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যানজট বেশি থাকার কারণ জানাল ডিএমপি
Prev Post রোববার ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যানজট বেশি থাকার কারণ জানাল ডিএমপি
যে কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়
Next Post যে কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *