লাইফস্টাইল ডেস্ক :
ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর চিয়া বীজ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো সে কথা এত দিনে প্রায় সবাই জেনে গিয়েছেন। স্বাস্থ্য সচেতন যারা, তারা অনেকেই সকালে খালি পেটে পানিতে চিয়া বীজ খান।
অনেকে আবার সরবৎ, স্মুদি বা বিভিন্ন খাবারেও চিয়া বীজ ব্যবহার করেন। রূপচর্চা বিশেষজ্ঞরা আবার শ্যাম্পুর পর রাসায়নিকযুক্ত কন্ডিশনার ব্যবহার না করে চিয়া বীজ ভেজান পানি দিয়ে চুল ধোয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু সেই চিয়া বীজ যে স্পর্শকাতর ত্বকের ‘মহাঔষধ’ তা জানতেন? ত্বকের যত্নে চিয়া বীজ কীভাবে কাজ করে?
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের যত্ন নেওয়ার ধরনও বদলে যায়। মুখের অতিরিক্ত তেল, র্যাশ-ব্রণর সমস্যা নিয়ে নাজেহাল হতে হয় কৈশোর বা বয়ঃসন্ধিতে। আবার, একটু বড় হতে না হতেই চোখের তলায় কালচে দাগ। মধ্যবয়সে পৌঁছতেই বলিরেখা কিংবা জেল্লা হারানোর সমস্যা জাঁকিয়ে বসে। ত্বকের সমস্যা, বয়স অনুযায়ী সে সবের সমাধানও আলাদা হওয়ার কথা। তবে, অভিজ্ঞরা বলছেন, এ বিষয়ে একাই একশো হল চিয়া বীজ। শরীরচর্চা করেন যাঁরা, তাঁদের কাছে এই বীজ বেশ জনপ্রিয়। ওজন ঝরাতে, বিপাকহার ভাল রাখতে চিয়ার জুড়ি মেলা ভার। পাশাপাশি, ত্বকের যত্নেও কাজে আসে চিয়া বীজ। তাই দাম দিয়ে চিন, জাপান কিংবা কোরিয়ার নানা রকম প্রসাধনী না কিনে ব্যবহার করে দেখতেই পারেন চিয়া বীজ।
ত্বক আর্দ্র রাখতে
স্পর্শকাতর ত্বকের যেকোনো সমস্যার সমাধানে চিয়া বীজ অব্যর্থ। মুখে র্যাশ বেরোনোর ভয়ে যারা মুখে কিছু মাখতে পারেন না, তাদের ত্বকে আর্দ্রতার অভাব দেখা যায়। রাসায়নিকযুক্ত ময়েশ্চারাইজারের বদলে চোখ বন্ধ করে ভরসা রাখতে পারেন চিয়া বীজের ওপর। বাড়িতে অ্যালোভেরা জেল না থাকলে তার বদলে চিয়া বীজ দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতেই পারেন।
প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর
রাসায়নিক এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করলে, ত্বকে র্যাশ, ব্রণ, লাল হয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। সেই সবের বদলে চিয়া বীজ ব্যবহার করাই যায়। বাজারজাত এক্সফোলিয়েট ব্যবহার করলে অনেক সময়ই ত্বকের আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। চিয়া বীজের ক্ষেত্রে এমনটা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
ব্রণর সমস্যায়
চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক এবং অন্যান্য খনিজ থাকায়, তা ব্রণর সমস্যায় খুব ভালো কাজ করে। এছাড়াও চিয়া বীজ খেলে, ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তৈলাক্ত ত্বকে তেলের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
বলিরেখা দূর করে
ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ঠিক থাকলে, চট করে ত্বকে বলিরেখার সমস্যা দেখা দেয় না। চিয়া বীজের মধ্যে জলীয় উপাদান বেশি থাকায়, বয়সের জন্য ত্বকে যে আর্দ্রতার অভাব হয়, তা পূরণ হয়ে যায়।
ত্বকের জেল্লা ধরে রাখে
ভিটামিন ‘এ, সি, আয়রন, পটাসিয়াম এবং বিভিন্ন খনিজে সমৃদ্ধ চিয়া বীজ ত্বকের ‘ইলাস্টিসিটি’ বা স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখে। ভেতর থেকে ত্বককে চকচকে করে তোলে।
চিয়া বীজ ত্বকের ঠিক কোন কোন উপকারে লাগে?
১) চিয়া বীজে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা ত্বকের প্রদাহজনিত সমস্যাগুলি দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাঁদের ত্বক ভীষণ স্পর্শকাতর, যাঁদের মুখে ব্রণর উৎপাত বেশি— তাঁরা এই বীজ ভেজানো জল মাখতে পারেন। খেলেও উপকার পাবেন।
২) ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর চিয়া বীজ ত্বককে পরিবেশগত দূষণ, ফ্রি র্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার পাশাপাশি, চিয়া বীজ মুখে বয়সের ছাপ পড়াও আটকে দিতে পারে।
৩) ত্বক স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভূমিকা রয়েছে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি প্রাকৃতিক উৎস হল চিয়া বীজ। বয়স বাড়লেও ত্বকের টান টান ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে এই উপাদানটি।