Search

থাইরয়েড কী, লক্ষণ ও করণীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

  • 0
  • 2 views

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

থায়রয়েড গ্রন্থি একটি অতি প্রয়োজনীয় অন্ত:ক্ষরা (এন্ডোক্রাইন/Endocrine) গ্লান্ড (Gland), যা গলার সামনের অংশে অবস্থিত। এটি মানবশরীরের প্রধান বিপাকীয় হরমোন তৈরিকারী গ্ল্যান্ড। থাইরয়েড হরমোনের অন্যতম কাজ শরীরে বিপাকীয় হার বা বেসাল মেটাবলিক রেট বাড়ানো। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ স্নায়ুর পরিপক্বতা।

শরীরে এই থাইরয়েড হরমোনের একটা নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। নির্দিষ্ট মাত্রার চাইতে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলেই শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

শরীরে থাইরয়েড হরমোন কম উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজম এবং বেশি উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিজম।

ধরন

কয়েক ধরনের থাইরয়েড সমস্যা দেখা যায়। যেমন থাইরয়েড হরমোনের স্বল্পতা বা হাইপোথাইরয়ডিজম, হরমোন বেশি নিঃসরণ হওয়া বা হাইপারথাইরয়েডিজম। এ দুটি প্রধান সমস্যা ছাড়াও থাইরয়েড ফোলা, থাইরয়েড টিউমার ও থাইরয়েড ক্যানসারের মতো সমস্যাও হতে পারে।

কারণ

নানা কারণে থাইরয়েডের সমস্যা হতে পারে। এ হরমোন উৎপাদনে আয়োডিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আয়োডিন কম থাকলে থাইরয়েড হরমোন কম উৎপন্ন হবে অথবা থাইরয়েড ফুলে যাবে। এই ফুলে যাওয়াকেই বলা হয় গলগণ্ড। আবার জন্মগতভাবে থাইরয়েড গ্রন্থির ত্রুটিতেও থাইরয়েডে সমস্যা দেখা দেয়। কারও থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে তার সন্তানদেরও এ সমস্যা হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার ত্রুটি এবং অ্যান্টিবডি তৈরির কারণে থাইরয়েডে সমস্যা দেখা দেয়।

লক্ষণ

প্রজননক্ষম নারীদের হাইপোথাইরয়েডিজমের হার পুরুষদের তুলনায় প্রায় দশ গুণ বেশি, জটিলতাও বেশি। অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি, সব সময় ক্লান্তিবোধ, অনিয়মিত মাসিক বা দীর্ঘদিন অতিরিক্ত মাসিকের মতো সমস্যা, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া, চুল ও ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, বারবার গর্ভপাত, বন্ধ্যত্বসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দেয়। শিশুদের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত, বয়ঃসন্ধি বিলম্ব ও মানসিক বিকাশে সমস্যাও দেখা দেয়। অন্যদিকে হাইপারথাইরয়েডে হঠাৎ করেই ওজন কমা, কাঁপুনি, উদ্বেগ, অত্যধিক ঘাম ও ঋতুচক্রে কম রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। থাইরয়েডে সমস্যার কারণে মাংসপেশির ক্ষয় বেড়ে যায়, সক্ষমতা কমে যায়। চোখ বড় হয়ে যেতে পারে।

রোগ নির্ণয়

এই রোগ নির্ণয়ে সাধারণত চিকিৎসকেরা রক্তে ফ্রি থাইরক্সিন এবং টিএসএইচ (থাইরয়েড-স্টিমুলেটিং হরমোন) পরীক্ষা করতে দিতে পারেন। তবে যদি বাড়াবাড়ি অবস্থা হয় সেক্ষেত্রে থাইরয়েডের নানা অ্যান্টিবডি, গলার আলট্রাসনোগ্রাফি, রেডিও-আয়োডিন আপটেক পরীক্ষাও করতে হতে পারে। ক্যান্সার সন্দেহ হলে গলা থেকে টিস্যু নিয়ে বায়োপ্সি করতে বলা হয়ে থাকে।

চিকিৎসা

থাইরয়েড রোগের চিকিৎসার প্রধান বিষয় হলো চিকিৎসা, অস্ত্রোপচার, হরমোন ও বিকিরণ। যদি থাইরয়েড রোগে কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে সারাজীবন ওষুধ খেতে হয়। তবে থাইরয়েডের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত ওষধগুলোর মূল্য খুবই কম। নারীদের সন্তান নেওয়ার আগে ও গর্ভাবস্থায় উপসর্গ না থাকলেও থাইরয়েড পরীক্ষা করা নিরাপদ। থাইরয়েডের লক্ষণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ভালো কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন, তার নির্দেশতো পরীক্ষা করুন এবং নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপন করুন।

 

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
Prev Post ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
উটের দুধের গুণাগুণ
Next Post উটের দুধের গুণাগুণ

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *