Search

নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা

  • 0
  • 3 views

নিজস্ব প্রতিবেদক :

নিত্যপণ্যের দাম যেন কোনোভাবেই বাগে আসছে না। একটার দাম কিছুটা কমছে তো বাড়ছে অন্যটার। এরই মধ্যে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম ঠেকেছে একশ টাকায়। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে। এছাড়া আলুর দাম উঠেছে ৬৫ টাকা প্রতিকেজি, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ৫ টাকা বেশি। কমেনি কাঁচা মরিচের ঝালও, বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে। আরও বেশকিছু নিত্যপণ্যের দাম এখনো চড়া। এমন পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল হয়ে পড়ছেন নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা।

শুক্রবার (২৮ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বাজার ঘুরে দেখা যায় বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, গোল বেগুন ৮০-৯০ টাকা, পটল ৫০-৬০, চিচিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০-৬০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৬০-৮০ টাকা, ছোট সাইজের মিষ্টি কুমড়া ১০০-১২০ টাকা, জালি ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কাঁচা কলা ডজন ৯০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, টমেটো ১৫০ টাকা, শশা ১৫০ টাকা। যা গেল সপ্তাহে প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে। কাঁচা মরিচের কিছুটা দাম কমলেও তা ২৫০ টাকার উপরেই বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ৪০০ টাকার উপরে দাম ছিল। এছাড়াও শাকের মধ্যে পাট শাক ১৫-২০, কলমি শাক ১০-১৫, পালং ১০-১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০-৪০, লাল শাক ১৫ টাকা, পুই শাক ৩০-৪০ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ভ্যানে কিংবা ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী বাজারে সপ্তাহের ছুটির দিন বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে করলা, বেগুন প্রতি কেজি ১০০ টাকা। আর বাকি সবজিগুলোরও বাড়তি দাম। বলতে গেলে ৬০ টাকার নিচে বাজারে কোনো সবজি নেই। এত দাম দিয়ে সবজি কিনে খেতে সাধারণ মানুষের আসলেই সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। বাজারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, যেদিন যখন ইচ্ছে সবজির দাম বেড়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বাজারে।

সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে শনির আখড়া বাজারের সবজি বিক্রেতা ইদ্রিস আলী বলেন, আজ পাইকারি বাজারেই সব ধরনের সবজিই বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। যে কারণে খুচরা বাজারেও আজ দাম বেশি। আসলে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজি এসেছে কম। এ ছাড়া অনেক সবজির মৌসুম শেষ হয়ে গেছে, নতুন করে সেসব সবজি বাজারে ওঠার আগ পর্যন্ত এসবের দাম কিছুটা বাড়তিই থাকবে। সব মিলিয়ে বাজারে সবজি সরবরাহ আগের চেয়ে তুলনামূলক কম। সে কারণেই মূলত সবজির দাম আজ বাড়তি যাচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আজকের বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি, গত সপ্তাহেও ৭৫০ টাকার মধ্যেই ছিল। এছাড়াও প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। এদিকে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। দেশি মুরগি ৭০০-৭৩০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।

খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাকে ডিমের ডজনে গুনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা। পাইকারিতে ডিমের পিস প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকা ৫০ পয়সা। পাড়া-মহল্লায় ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লারের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা।

৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুইয়ের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩৭০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার টাকা, শোল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা এবং কাইক্ক্যা ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি দেশি বাসমতি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা, মাঝারি মানের বিআর ২৮ ও ২৯ চাল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা এবং মোটা স্বর্ণা ৫৪ টাকা এবং মোটা হাইব্রিড ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদুল আজহার আগে এসব চালের দাম কেজিতে মানভেদে এক থেকে দুই টাকা পর্যন্ত কম ছিল।

পাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চালের মধ্যে প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে ৫৯ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৭৪ টাকায়। আর দেশি বাসমতি চালের কেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকা।

মাঝারি মানের প্রতি কেজি বিআর ২৮ চাল ৫১ থেকে ৫৩ টাকা, বিআর ২৯ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, পাইজাম ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি গুটি স্বর্ণা মানভেদে ৪৯ থেকে ৫১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাইব্রিড মোটা চালের কেজিতে ৪৬ টাকা। ঈদের আগে এসব চালের কেজি এক থেকে দুই টাকা কম ছিল।

বাজারগুলোতে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। দেশি ও আমদানি করা মসুর ডালের কেজি ১৫০ টাকা, আমদানি করা মোটা ডালের কেজি ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১৩০ টাকা, অ্যাংকর ডালের কেজি ৯০ টাকা।

 

চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে আগুনে ৩ জন নিহত
Prev Post চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে আগুনে ৩ জন নিহত
ত্বকের যত্নে চিয়া বীজ
Next Post ত্বকের যত্নে চিয়া বীজ

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *