ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, চিকিৎসার জন্য ভারতে আসা বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ই-মেডিকেল ভিসা চালু করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে রংপুরে নতুন সহকারী হাইকমিশন খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শনিবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর নরেন্দ্র মোদি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, আজ আমরা নতুন খাতে সহযোগিতার জন্য ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছি। জলবায়ু বিষয়ে অংশীদারত্ব, ডিজিটাল খাতে অংশীদারত্ব, সুনীল অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি), মহাকাশ- এরকম অনেক বিষয়ে সহমতের ফল দুই দেশের তরুণরা পাবে।
তিনি বলেন, গত এক বছরে আমাদের ১০ বার দেখা হয়েছে। কিন্তু আজকের দেখা হওয়ার ঘটনাটি বিশেষ। কারণ বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর আমাদের প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হলেন শেখ হাসিনা।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, গত এক বছরে আমরা একসঙ্গে জনকল্যাণমূলক অনেক প্রকল্প সম্পন্ন করেছি। আখাউড়া দিয়ে দুই দেশের মধ্যে রেল সংযোগ চালু হয়েছে। খুলনা মোংলা বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর জন্য কার্গো সুবিধা শুরু হয়েছে। মোংলা বন্দর প্রথমবারের মতো রেলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। দুই দেশের মধ্যে ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্য শুরু হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের মধ্যকার প্রথম আন্তঃসীমান্ত মৈত্রী পাইপলাইন স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা আরো বেশি ডিজিটাল এবং জ্বালানি সংযোগের ওপর জোর দেব। এতে করে দুই দেশের অর্থ ব্যবস্থায় গতি আসবে। আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দুপক্ষই সিইপিএ নিয়ে আলোচনা শুরুর বিষয়ে সহমত। বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো নির্মাণে ভারত সমর্থন দেবে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ৫৪টি নদী ভারত ও বাংলাদেশকে যুক্ত করে। বন্যা ব্যবস্থাপনা, আর্লি ওয়ার্নিং ও খাবার পানি প্রকল্পে আমরা সহযোগিতা করে আসছি। ১৯৬৬ সালের গঙ্গা নদী ট্রিটির জন্য কারিগরি পর্যায়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাংলাদেশে তিস্তা নদীর সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনার জন্য দ্রুতই একটি টেকনিক্যাল (কারিগরি) টিম বাংলাদেশে যাবে। সুরক্ষা সহযোগিতাকে আরো মজবুত করার জন্য ডিফেন্স প্রডাকশন থেকে শুরু করে সৈন্যদল পর্যন্ত আধুনিকীকরণে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আমরা সন্ত্রাস, উগ্রপন্থা ও সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে আমাদের সহযোগিতা দৃঢ় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি ক্রিকেট বিশ্বকাপে আজকের (২২ জুন) ম্যাচের জন্য ভারত ও বাংলাদেশ-উভয় দলকে শুভকামনা জানাই। ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার বাংলাদেশ। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই।