লাইফস্টাইল ডেস্ক :
ভরপেট খাওয়া হলেও কিছুক্ষণ পর আবার ক্ষুধা পেয়ে যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন এই অনুভূতির কথা। তবে বিশেষজ্ঞরা কিছু কারণের কথা বলছেন ক্ষুধা বাড়ার। খাবার কিছুক্ষণ পরেই আবার খেতে ইচ্ছা করা বা বেশি বেশি খাওয়ার পরেও আরও খেতে ইচ্ছা করা বেশি ক্ষুধা লাগার প্রধান লক্ষণ।
অনেকেই আছেন যাই খান না কেন সবসময় ক্ষুধার্ত থাকেন। বিভিন্ন কারণে এমন হতে পারে। পুষ্টির অভাব, অপর্যাপ্ত ঘুম কিংবা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে এমন হতে পারে। ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা শারীরিক নানা জটিলতারও ইঙ্গিত দেয়। হাইড্রেটেড থাকা এবং পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করা ক্ষুধা কমানোর কার্যকর উপায়।
বারবার ক্ষুধা লাগার কারণ জেনে নিন
কার্বোহাইড্রেট : রাতে কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে কিছুক্ষণ পর আবার ক্ষুধা লাগতে পারে। যখন আমরা একসঙ্গে অনেক বেশি কার্বোহাইড্রেট খাই, তখন চিনির মতোই তা খুব দ্রুত শরীর শুষে নেয়। রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট বাদ দিয়ে পরিমিত আন-রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট যেমন মিষ্টি আলু, বাদামি চাল, মাছ বা মুরগি, ব্রকলি কিংবা অন্যান্য সবজি খান।
ঘুম : ক্ষুধা বাড়াতে ঘুম অনেকটা প্রভাব ফেলে। কম ঘুম গ্রেলিন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ক্ষুধার উদ্দীপক। যার ফলে কম ঘুম ওজনও বাড়িয়ে দিতে পারে। ভালো ঘুমের জন্য ম্যাগনেশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি পেশি রিল্যাক্স করে। সবুজ শাক, বাদাম, বীজ, মাছ, কলা ও চকোলেটে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে।
তৃষ্ণা : অনেক সময় তৃষ্ণাকে আমরা ক্ষুধার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলি। মাঝে মাঝে আমরা ক্ষুধার্ত বোধ করি কিন্তু ওই সময়ে শরীরে হয়তো প্রয়োজন এক থেকে দুই গ্লাস পানি। কিন্তু ভরপেট খাবার খেয়ে ফেলি।
মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল : মেডিকেল পরীক্ষায় দেখা গেছে, নারীদের ক্ষুধা ও খাবার গ্রহণের মাত্রা বেড়ে যায় তাদের মাসিক চক্রের দ্বিতীয়ার্ধে। ব্লাড সুগার লেভেল ঠিক রাখতে এবং ক্ষুধা নিবারণে প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন মাছ, ডিম, ডাল, বাদাম ও বিভিন্ন প্রকার বীজ খান।
গর্ভকাল : গর্ভকালে ক্ষুধা বাড়ে, সঙ্গে বাড়ে ক্যালরির চাহিদাও। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এ সময় স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। এ সময় রিফাইন্ড ও চিনিসমৃদ্ধ খাবার ত্যাগ করতে হবে।
প্রোটিনের অভাব : অতিরিক্ত ক্ষুধা প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করা। যখন শরীরে প্রোটিনের মাত্রা কম থাকে, তখন শরীর ঘন ঘন ক্ষুধার সংকেত দেয়। ক্ষুধা মেটাতে খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন।
ডায়াবেটিস : আপনি যদি ঘন ঘন ক্ষুধা অনুভব করেন তবে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। শরীর ইনসুলিন তৈরি না করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে ক্ষুধা বেড়ে যেতে পারে।
মানসিক চাপ : আপনি যখন মানসিক চাপে থাকেন তখন আপনার শরীর কর্টিসল নিঃসরণ করে। এটি এমন একটি হরমোন যা আপনাকে ক্ষুধার্ত বোধ করায়। এটাকে বলা হয় স্ট্রেস ইটিং। তখন শরীরে পুষ্টির চেয়ে স্বস্তির জন্য ঘন ঘন খাবার গ্রহণের প্রবণতা দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে পারে। এজন্য কী কারণে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগছে তা জানাটা জরুরি। এজন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকের সহায়তা নিন। তাহলে সুস্থ থাকতে পারবেন।