স্পোর্টস ডেস্ক :
সর্বশেষ আইপিএলে বিরাট কোহলির সঙ্গে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলেছেন দীনেশ কার্তিক। তবে এবার নতুন ভূমিকায় দেখা যাবে ভারতের সাবেক এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে।
এক মাসে মূলত তিন ভূমিকায় দেখা গেছে কার্তিককে। গত ২৪ মে আইপিএল থেকে অবসর নিয়েছিলেন। এরপর এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে ধারাভাষ্যকার হিসেবে দেখা গেছে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এবার তাকে দেখা যাবে কোচ হিসেবে। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু দলের ব্যাটিং কোচ এবং মেন্টর হলেন ফ্র্যাঞ্চাইজির সাবেক এই ক্রিকেটার।
সর্বশেষ কয়েক আসরে আরসিবির হয়ে খেলেছিলেন কার্তিক। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ইতি টানার কয়েক মাসের মধ্যেই কার্তিককে নতুন দায়িত্ব দিয়ে ফিরিয়ে নিলেন বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১ জুলাই) সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর জানিয়েছে আরসিবি।
আরসিবি লিখেছে, আমাদের উইকেটরক্ষক দীনেশ কার্তিককে নতুন করে স্বাগত জানাচ্ছি। আরসিবিতে নতুন অবতারে ফিরে আসছেন তিনি। আরসিবির পুরুষ দলের ব্যাটিং কোচ এবং মেন্টর হিসেবে কাজ করবেন কার্তিক। ডিকে’কে ক্রিকেট থেকে দূরে রাখা গেলেও ওর থেকে ক্রিকেটকে দূরে রাখা সম্ভব নয়। আমাদের শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা থাকল।
২০২৫ আইপিএলে একই সঙ্গে বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং কোচ ও পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করবেন কার্তিক। বেঙ্গালুরু তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আজ সেটা নিশ্চিত করেছে। এরই মধ্যে পেশাদার ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া কার্তিক কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করতে মুখিয়ে আছেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের সাবেক ব্যাটার বলেছেন, ‘পেশাদার পর্যায়ে কোচিং করানো আমার জন্য আসলেই রোমাঞ্চকর বিষয়। এমন নতুন যাত্রা শুরু করতে সত্যি বলতে অনেক আগ্রহী। আশা করি, ক্রিকেটার হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা দলের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।’
আইপিএলে এখন পর্যন্ত ১৭ মৌসুমে একবারও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বেঙ্গালুরু। তিনবার ফাইনাল খেলে হয়েছে রানার্সআপ। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির নতুন দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত কার্তিক বলেন, ‘আমার মতে, ক্রিকেটে সাফল্য শুধু কৌশলগত দক্ষতার ওপর নির্ভর করে না। একই সঙ্গে বুদ্ধিমত্তারও পরিচয় দিতে হয়। আমাদের ব্যাটিং গ্রুপকে কোচিং করানো ও মেন্টরের দায়িত্ব পালন করতে খুবই আগ্রহী। শুধু তাদের খেলার ধরন সংশোধন করলে হবে না। একই সঙ্গে চাপের মুখে ম্যাচে কীভাবে দায়িত্ব নিতে হয়, তাও শেখাব। এটা অনেক খুশির ব্যাপার যে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা চালিয়ে যেতে পারব।’
এর আগে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে আইপিএলে মোট ২৫৭টি ম্যাচ খেলেছেন কার্তিক। ২৬.৩২ গড়ে করেছেন ৪৮৪২ রান। বেঙ্গালুরু, কলকাতা ছাড়াও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেছেন। দেশের হয়ে ২৬টি টেস্ট, ৯৪টি এক দিনের ম্যাচ এবং ৬০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে ৩৯ বছরের প্রাক্তন ক্রিকেটারের।
বেঙ্গালুরু তো বটেই, ৮০০৪ রান করে আইপিএল ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক কোহলি। কোহলির থেকে এখানে বেশ পিছিয়ে আছেন কার্তিক। ৬০ ম্যাচে ৯৩৭ রান করে আইপিএলে বেঙ্গালুরুর সপ্তম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। গড় ও স্ট্রাইকরেট ২৪.৬৫ ও ১৬২.৯৫। চার মৌসুম খেলে করেছেন তিন ফিফটি। ২০১৫ আইপিএলের পর ২০২২ থেকে ২০২৪ টানা তিন মৌসুম বেঙ্গালুরুতে খেলেছেন কার্তিক।
২০০৮ থেকে শুরু করে আইপিএলের ১৭ মৌসুমেই খেলেছেন কার্তিক। বেঙ্গালুরু, দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (অধুনা দিল্লি ক্যাপিটালস), মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব (বর্তমান পাঞ্জাব কিংস), গুজরাট লায়ন্স, কলকাতা নাইট রাইডার্স—এই ছয় ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে ২৫৭ ম্যাচে করেছেন ৪৮৪২ রান। গড় ও স্ট্রাইকরেট ২৬.৩১ ও ১৩৫.৩৬। সবশেষ ২০২৪ আইপিএলে বেঙ্গালুরু ফাইনালে না উঠতে পারলেও দুর্দান্ত খেলেছেন কার্তিক। ২০০৪ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৮০ ম্যাচ। ভারতের জার্সিতে খেলেছেন ৬৪ টি-টোয়েন্টি। টেস্ট ও ওয়ানডেতে খেলেছেন ২৬ ও ৯৪ ম্যাচ।