লাইফস্টাইল ডেস্ক :
মাইগ্রেনের রোগীরা মাথার যেকোনো একপাশে মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের ব্যথা অনুভব করেন। অনেক সময় ব্যথার তীব্রতা এত বেশি হয় যে রোগীর বমিও হতে পারে। মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কার্যক্রমের ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা অনুভব হতে পারে।
মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত ভোরে শুরু হয়। এই ব্যথা শুরু হলে পাশের মানুষদের সহ্য করা যায় না। অসংলগ্ন আচরণ করতে শুরু করেন রোগী। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মাইগ্রেনের রোগীরা। দেখতেও বিদ্ধস্ত মনে হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলেও অনেক সময় মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেন, মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে এমন খাবার গ্রহণ করা উচিত।
তবে কিছু খাবার আছে, যেগুলো নিয়মিত থেলে মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি মিলবে-
ওটস্
রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ওটস। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে মাইগ্রেনের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি-২
পাশাপাশি ভিটামিন বি-২ এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। এর ফলে মাইগ্রেনের ব্যথা কম হয়। মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত খাদ্য, চিজ, বাদামে ভিটামিন বি-২ এর পরিমাণ বেশি মাত্রায় থাকে।
তরমুজ
বেশি বেশি পানি পান করলে মাইগ্রেনের আশঙ্কা কমে। তবে শরীর হাইড্রেটেড রাখতে শুধু পানি পান করা যথেষ্ট নয়। এমন সব খাবার খাওয়া উচিত যেগুলোতে পর্যাপ্ত পানি থাকে। তরমুজের মতো ফলে ৯২ শতাংশ পানি থাকে। এটা খেলে পানি স্বল্পতা কমে, খিদে কমে এবং মাইগ্রেনের আশঙ্কা কমে যায়।
পানি ও ফলের রস
ডিহাইড্রেশন মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ। মাইগ্রেনের রোগীরা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি, লেবুর রস, আমলা, চা, অ্যালোভেরা ফলের রস পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
সবুজ শাক-সবজি
মাইগ্রেনের জন্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার খুবই দরকার। ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত খাবার মাইগ্রেনে রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। যেমনটা বলা যেতে পারে, পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকে। যদি মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে তাহলে বেশি বেশি পালংশাক কিংবা সবুজ শাক খেতে পারেন।
বাদাম
বাদামে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং স্নায়ুর চাপ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বাদামে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্ট-অক্সিডেন্ট, যা মাথা ব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই মাইগ্রেন রোগীদের নিয়মিত বাদাম খাওয়া দরকার।
ডার্ক চকোলেট
চকোলেট ছোট-বড় সকলের পছন্দের। একটি চকোলেট দিয়ে আপনি যেমন কারো মনের ব্যথা কমাতে পারেন ঠিক সেভাবেই আপনি হয়তো জানেন না একটি চকোলেটের মধ্যে রয়েছে সেই গুণ, যা আপনাকে অসহনীয় মাইগ্রেনের ব্যথা থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে।
লবঙ্গ
সর্দি হোক বা কাশি বা গলার ব্যথা, সব রোগের একমাত্র ওষুধ ধরা হয় লবঙ্গকে। তাই সঙ্গে সব সময়ের জন্য একটি লবঙ্গ রেখে দিন। যখনই মনে হবে মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে এটি খেয়ে নিন। আর পেয়ে যান সুফল। তবে নির্দিষ্ট খাবার বা ওষুধ মাইগ্রেনের জন্য বলা কঠিন। যদি এটি খুবই সমস্যা করে থাকে তাহলে এগুলো খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনার নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ নিন।
কলা
দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকলে শরীরে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়। এমন অবস্থায় মাথা ধরে যেতে পারে। আর সেটা রূপ নেয় মাইগ্রেনের ব্যথায়। এমন পরিস্থিতিতে জলদি করে যদি কলা খেয়ে নিতে পারেন তাহলে মাইগ্রেনের ব্যথার আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
ভেষজ চা
শরীর হাইড্রেটেড রাখতে ভেষজ চা হতে পারে অন্যতম উপকারী পানীয়। এমনিতেই লাল চা খেলে মাথা ধরার আশঙ্কা কমে আসে। আর ভেষজ চা এই প্রবণতা আরও কমিয়ে দেয়।
মাশরুম
অনেক সময় হজমের গোলমাল বা পেটের অন্য কোনো সমস্যা হলেও ধরতে পারে মাথা। এই ব্যথা বাড়লে সেটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। মাশরুম, ডিম বা বাদামের মতো খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্ল্যাবিন। তাই এসব খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। খাবার হজম ঠিক থাকলে সমস্যা থাকবে না মাথা ধরার।