লাইফস্টাইল ডেস্ক :
দীর্ঘ বা অল্প সময়ের জন্য হলেও আমরা অনেকেই মানসিক ক্লান্তিতে ভুগে থাকি। যা ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রেও অনুভত হয়ে থাকে। মুলত কাজ বা কাজের পরিবেশ, ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঘটনা অথবা অন্যান্য নানা কারণে এই মানসিক চাপ অনুভুত হয়ে থাকে।
দিনের পর দিন একই রকম চলতে থাকলে অনেক সময় কর্মক্ষেত্র অস্বস্তিকর হয়ে উঠে। তবে এই রকম পরিস্থিতিতে কাজ তো আর ছেড়ে দেয়া যাবে না। সেই ক্ষেত্রে মানসিক ক্লান্তি মুক্তির উপায় খুঁজে নিতে হবে। তবে তার আগে জেনে নিতে হবে মানসিক ক্লান্তি কি কি কারনে আসে?
মানসিক ক্লান্তির কারণ কী?
কর্মজীবনে লক্ষ্যপূরণের চাপ
ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিশ্রাম ছাড়াই কাজ
কাজ নিয়ে অতৃপ্তি, সেই সাথে চাহিদামতো বেতন না পাওয়া
ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা
দীর্ঘ সময় ছুটি উপভোগ করতে না পারা
দিনের পর দিন এই চাপ নিয়ে চলতে থাকলে একটা সময় মানুষ মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যার প্রভাব শরীরেও পড়তে শুরু করে। অতৃপ্তি আর আপ্রাপ্তির ফলে ক্রমাগত মন খারাপ থেকে একটা সময় অবসাদও তৈরি হয় । আপনার মানসিক চিন্তা ভাবনার জেরে হজমে সমস্যা, মাথা ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, ওজন আচমকা কমে বা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন অসুস্থ বোধ করার মতো লক্ষণ দেখা যায়। আচরণেও এর প্রভাব পড়ে। কারও সঙ্গে কথা বলতে ভাল না লাগা, পছন্দের কাজ করতেও ইচ্ছে না করা । এর থেকে মুক্তির উপায়……
১. মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তির প্রথম উপায় হলো ছুটি। সেটা হতে পারে লম্বা ছুটি আবার ঞতে পারে একটা দিনের ছুটি। আর এই সময়টা কাজের কথা তো দূরের কথা, কাজের কথা ভাবলেও চলবে না। আবার সমস্যা বেশি মনে হলে, কিছু দিনের ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরে আসা আসতে পারেন। মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তির জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় আর হয় না।
২. আবার অতিরিক্ত মানসিক চাপ হলে খুঁজে বের করতে হবে কেন কাজে অতিরিক্ত চাপ হচ্ছে, এরপর তা বুঝে চাপ কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। প্রয়োজনে কোন সময় কি কাজ করলে সুবিধা হতে পারে, সে বিষয় ভেবে দেখতে হবে। সেই সাথে চেষ্টা করতে হবে টানা কাজ না করে মাঝেমধ্যে একটু বিশ্রাম নেয়ার।
৩. খুব ক্লান্ত লাগলে অন্তত্য ১০ মিনিট সময় নিয়ে টানটান হয়ে বসে গভীরভাবে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। এই প্রক্রিয়ায় মন একটু শান্ত হবে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করতে নিয়ম করে কিছুক্ষণ প্রাণায়াম করুন। প্রাণায়াম বলতে বোঝায় মূলত শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ। সঠিক নিয়মে শ্বাস নেওয়া, ধারণ এবং ত্যাগকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমই প্রাণায়াম। মাস খানেক প্রাণায়াম অভ্যাস করলেও মনের পরিবর্তন সামান্য হলেও বোঝা যাবে।
৪. সেই সাথে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করতে মাসাজ খুবই কার্যকর। এতে আরামবোধ হয়, ভালো লাগে।
৫. ৮ থেকে ৯ ঘণ্টার টানা একটা ঘুম খুব জরুরি। অত্যধিক চাপ থাকলে ঘুমের সমস্যা হয়। ভালো করে ঘুম মানসিক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
৬. নিজেকে সময় দেয়া একজন মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি জুরুরি। কিছুটা সময় নিজের জন্য ব্যয় করতে হবে। ভালো থাকার জন্য মনকেও গুরুত্ব দিতে হয়। দিনের একটা সময় বের করে নিজের ভালো লাগার কাজগুলি করুন। যেমন ভালো গান শোনা, বাইরে খেতে যাওয়া, পছন্দের সিনেমা দেখা, খেলা দেখা ইত্যাদি।
৭. যদি সম্ভব হয় খোলা জায়গায় হাঁটুন, হালকা ব্যায়াম করুন। খোলা হাওয়ায় বের হলে মন ভালো হবে। ক্লান্তি দূর হলে কাজ করতেও সুবিধা হবে।