Search

শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

  • 0
  • 1 views

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, আমার বক্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। তারা নিজেরাই নিজেদের রাজাকার বলে স্নোগান দিয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর রামপুরায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনে দুষ্কৃতকারীদের তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বিটিভি কার্যালয় ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।

দুষ্কৃতকারীদের খুঁজে বের করতে জনগণের সহায়তা চেয়ে তিনি বলেন, যারা এই ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, আনাচে-কানাচে যেসব হামলাকারী লুকিয়ে আছে, তাদের খুঁজে বের করে সাজা নিশ্চিত করতে দেশের জনগণকে সহযোগিতা করতে হবে। এই শত্রুদের খুঁজে বের করতে জনগণের সহযোগিতা চাই।

সরকারপ্রধান তার দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে বলেন, কোটা ইস্যুতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছি তা বিকৃত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। তারা নিজেরাই নিজেদের রাজাকার বলে স্নোগান দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়ত অতীতের মতোই অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। এবার তারা আলাদাৃ। তারা গান পাউডার ব্যবহার করেছে। দেশের বাইরে আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট ও মানুষের রুটি রুজি বন্ধের পাঁয়তারা করছে তারা।

মেট্রোরেল, বিটিভিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংসের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে যেখানে আছেন, তাদের খুঁজে বের করুন, তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। আমি দেশবাসীর কাছে সে আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে বলব, ঢাকাবাসীকে বলব, যাদের জন্য আজ আপনাদের এ দুর্ভোগ, যারা ধ্বংস করল, যাদের জন্য আজ বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, আমি তাদের বিচারের ভার এদেশের জনগণের ওপরই দিয়ে যাচ্ছি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এদেশের মানুষের রুটি-রুজির ওপর হাত দিয়েছে, রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের বিচার জনগণকেই করতে হবে। কারণ জনগণই এ দেশের একমাত্র শক্তি। ’

কেউ মিথ্যাচার চালিয়ে যেন বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে কাউকে যেন বিভ্রান্ত করতে না পারে। (সবাই) আসল সত্যটা জানুক। ’

বিটিভিতে হামলা ও ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে এসে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে বিটিভিতে বিভিন্ন উন্নয়ন করেছি, আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত করেছি। কিন্তু আজ এত বছর পর এসে দেখা গেল, সেই ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে নারকীয় তাণ্ডব, তারই যেন একটা বীভৎস রূপ বাংলার মানুষ দেখছে। ’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী কিন্তু টেলিভিশনের ওপর হাত দেয়নি বা কেউই কখনো দেয়নি। কিন্তু আজ এ টেলিভিশন সেন্টারকে যারা এভাবে পোড়াল, একটা কিছু নেই যে রক্ষা পেয়েছে। তাহলে এরা কারা? এরা কি এদেশেরই মানুষ? এদের কি এ দেশেই জন্ম? একটা দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চিন্তা নিয়েই যেন তাদের এ আক্রমণ।

বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উন্নয়ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশটা আমরা অনেক কষ্ট করে স্বাধীন করেছি। আর আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। সেই মর্যাদাটাকে ধ্বংস করার জন্যই এ ধ্বংসযজ্ঞ।

বিভিন্ন সময় বিটিভিতে আসার কথা স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ অতীতের কথা মনে পড়ে, আমি কতবার এখানে এসেছি। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে এখানে ভাষণ দিতে এসেছি। নানা অনুষ্ঠানে এসেছি। আজ যে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম এরপর এটা আবার কবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা যাবে, জানি না।

এ সময় অত্যন্ত আবেগাপ্লুত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এগুলো দেখে আমি আসলে আর কথা বলতে পারছি না। একেকটা জিনিস যখন গড়ে তোলা হয়, অনেক কষ্ট করেই করতে হয়। ’

তিনি বলেন, দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। সেটা তো আমার দেশের মানুষেরই জন্য। একটা জিনিস এমনভাবে তৈরি করার চেষ্টা করি, যাতে শুধু দেশে নয় বিদেশিদের কাছেও দৃষ্টিনন্দন হয়।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেশের যে উন্নতি করছি, তার সিম্বল হিসেবে ব্যবহার হবে, সে জায়গাগুলো একে একে ধ্বংস করা হচ্ছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে। এত দিনের এত কষ্টের ফসল সব শেষ করে দিতে চাচ্ছে। এটাই সবচেয়ে বড় কষ্টের। দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই, আমি তাদের সহযোগিতা চাই।

সরবরাহ বাড়ায় কমেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম
Prev Post সরবরাহ বাড়ায় কমেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম
Next Post

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *