Search

শ্বেতী রোগের কারণ ও প্রতিকার

লাইফস্টাইল ডেস্ক

  • 0
  • 5 views

লাইফস্টাইল ডেস্ক : 

আমাদের মধ্যে অনেকেই ধবল বা শ্বেতী রোগে ভোগেন। ধবল বা শ্বেতী রোগ কি? চামড়া সাদা বা কালো যাই হোক, ত্বক বা চামড়ার স্বাভাবিক রং যখন থাকে না এবং ত্বকের একটি অস্বাভাবিক রং দেখতে পাই, তখন তাকে শ্বেতি বা ধবল রোগ বলা হয়।

ত্বকে মেলানোসাইট নামে এক ধরনের কোষ আছে- যা মেলানিন নামক একটি রং উৎপাদন করে এবং এই মেলানিনের কারণেই আমরা ত্বকের স্বাভাবিক রংটি দেখতে পাই। এই মেলানোসাইট রোগাক্রান্ত হলে বা সংখ্যায় কমে গেলে কিংবা মরে গেলে মেলানিন নামক রং উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই নির্দিষ্ট স্থানে সাদা দাগ পড়ে।

যাদের ডায়বেটিস আছে কিংবা থাইরয়েডের রোগ থাইরোডাইটিস আছে তাদের শ্বেতি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি। বিশেষ এক জাতের রক্তশূন্যতা থেকেও এই রোগটি হতে পারে। শ্বেতি কোনো ছোঁয়াচে বা প্রাণঘাতী রোগ নয়। শ্বেতি রোগ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক বিরূপ ধারণা ও কুসংস্কার রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই রোগের নির্দিষ্ট কারণ এখনো জানতে পারেননি। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ১০ কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত।

কারণ

ম্যালাসেজিয়া ফারফার নামক এক ধরনের ছত্রাক শ্বেতি রোগের কারণ। শরীরের যে কোনে স্থানেই এই ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। তবে সাধারণত মুখ, বুক, পিঠ, হাতে ও পায়ে এর সংক্রমন বেশি দেখা যায়।

ছত্রাক আক্রান্ত স্থানে তৈরি করে ‘অ্যাজালাইক অ্যাসিড’, যা ত্বকের রং নির্ধারক উপাদান ‘পিগমেন্ট’ খেয়ে ফেলে। ফলে ওই স্থানটি সাদা বর্ণ ধারণ করে। ত্বকের এই রং পরিবর্তন হওয়াকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ‘পিটেরেসিস ভার্সিকালার’। বিবর্ণ হওয়ার পাশাপাশি চুলকানিও থাকতে পারে।

তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে জন্মগতভাবে যাদের শ্বেতি রোগ রয়েছে তাদেরটা ভালো হয় না।

শ্বেতি রোগের কারণ 

প্রথমত, মানব দেহের ত্বক এবং চুলের রঙ মেলানিন দ্বারা নির্ধারিত হয়। যখন মেলানিন উৎপাদনকারী কোষগুলি মারা যায় বা কাজ করা বন্ধ করে দেয় তখনই চামড়ার উপর ভিটিলিগো বা শ্বেতি দেখা যায়।

দ্বিতীয়ত, উপরের কারণটি ছাড়াও আরও নানা কারণে শ্বেতি দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রসাধনীর ব্যবহার, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের চটি, বেল্টের মত কোনওকিছু একভাবে শরীরের এক জায়গায় চেপে বসে থাকার মত বিষয়গুলি।

ভিটিলিগো সব ধরনের ত্বকের মানুষকে প্রভাবিত করে, তবে বাদামী বা কালো ত্বকের লোকেদের মধ্যে এটি আরও স্পষ্ট ভাবে পরিলক্ষিত হয়। এটা অবশ্য জীবননাশক বা সংক্রামক নয়।তবুও এর সাথে জড়িত মানুষের নানা কুসংস্কারের কারণে এই রোগটির একটা সামাজিক প্রভাব আছে যা আপনাকে স্বাভাবিকভাবেই একটা চাপে ফেলে দেয়। যা হতে পারে আপনার নিজের সম্পর্কে একটা খারাপ বোধ বা অস্বস্তি ও সংকোচ তৈরি হওয়া।

এখন একথা মনে আসতে পারে যে শরীরে মেলানিনের অভাব কেন হয়?
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল যে, দেহে মেলানিনের অভাব কেন হয় তার কারণ এখনও অজানা। তবে নিম্নলিখিত কিছু বিষয় এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে বলে মনে করা যায়।

একটি অটোইমিউন অবস্থা : এই পরিস্থিতিতে আপনার নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম স্ব-মেলানোসাইট কোষগুলোকে বহিরাগত আক্রমণকারী হিসাবে ভুল করে। এর ফলে আপনার শরীরের প্রতিরোধ সৃষ্টি কারী কোষগুলো নিজের দেহের কিছু কোষকে (মেলানোসাইট) শত্রু ভেবে ধ্বংস করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে।ফলে আপনার শরীরে, বিশেষত ত্বকে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

জেনেটিক মিউটেশন : জেনেটিক মিউটেশন হল আপনার শরীরের ডিএনএ এর ভিতরে কিছু রাসায়নিক পরিবর্তন যা আপনার মেলানোসাইটের কাজকে প্রভাবিত করতে পারে।প্রায় ৩০ টিরও বেশি জিন ভিটিলিগো হওয়ার সাথে যুক্ত আছে বলে মনে করা হয়।

স্ট্রেস : শারীরিক এবং মানসিক চাপের প্রভাব মেলানোসাইট কোষগুলির উপর পড়ে। যদি কোনো রকম শারীরিক আঘাত পান তাহলে এই চাপ আরও বেড়ে যায়।এর ফলে মেলানোসাইট রঞ্জক উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

পরিবেশগত প্রভাব : সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির বিকিরণ এবং বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আপনার দেহের মেলানোসাইট কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফলে আপনি শ্বেতি বা ভিটিলিগোর শিকার হয়ে পড়তে পারেন।

কাদের মধ্যে ভিটিলিগো বা শ্বেতিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে?
ভিটিলিগো হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই।নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যেকোনো মানুষের যে কোনো সময়ে এই রোগটি হতে পারে।সাধারণত ৩০ বছর বয়সের আগে ম্যাকুলস বা প্যাচগুলি স্পষ্ট হয়ে যায়।আপনি যদি কোন অটো ইমিউন ডিজিজ বা অ্যাডিসিন রোগে আগে থেকে আক্রান্ত থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে ভিটিলিগো হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়।।

শ্বেতি প্রাথমিক লক্ষণ

ত্বকে প্রকাশ পাওয়া যেকোনও সাদা দাগ মানেই কিন্তু তা শ্বেতি নয়।তবে শ্বেতির ক্ষেত্রে তা প্রাথমিকভাবে মুখ, বাহু, হাত, শরীরের খোলা জায়গা, যৌনাঙ্গের চারপাশের অঞ্চল এবং নিতম্ব সহ শরীরের যে কোনও জায়গার ত্বকে বিক্ষিপ্ত ছোট ছোট সাদা দাগ হিসেবে দেখা দিতে পারে , যা ভিটিলিগোর প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।

এছাড়াও দুটি চোখের মাঝখানে, মাথার চামড়ায়, ভ্রু, এমনকি দাড়িতে পর্যন্ত এটা শুরু হতে পারে।দাড়ি এবং চুল ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে। মুখ এবং নাকের মিউকাস মেমব্রেনে রঙের প্রলেপ উঠে যেতে পারে।

শ্বেতি প্রকারভেদঃ

মানবদেহে এর তীব্রতা, ধরণ ও স্থায়ীত্বের ভিত্তিতে ভিটিলিগো বা শ্বেতি নানা প্রকারের হয়ে থাকে। যার মধ্যে রয়েছে-

যখন শরীরের অনেকাংশে একসাথে সাদা সাদা দাগ দেখা যায় তখন তাকে সাধারন ভিটিলিগো বলে।এগুলি সাধারণত একসাথে বাড়তে থাকে।

যদি শরীরের একপাশে বিবর্ণতা দেখা যায় তাহলে তাকে সেগ্মেন্টাল ভিটিলিগো বলে।এটা সাধারণত অল্প বয়সে শুরু হয় এবং এক বা দুই বছর থাকার পর বন্ধ হয়ে যায়।
যখন শরীরের একটি মাত্র অঞ্চলে ভিটিলিগো সীমাবদ্ধ থাকে তখন তাকে লোকালাইজড ভিটিলিগো বলে।

আবার শুধুমাত্র মুখ ও হাতের যদি এই অসুখটি হয় তখন তাকে অ্যাক্রোফেসিয়াল ভিটিলিগো বলে।

আবার আক্রান্ত কলা কোষের উপর ভিত্তি করে ভিটিলিগো নানা ধরনের হয়-

মিউকোসালঃ এই প্রকারের ভিটিলিগো মুখ, নাক, যৌনাঙ্গের শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে আক্রান্ত করে।

ট্রাইকোমঃ প্রথমে বর্ণহীন বা সাদা বুলসি তৈরী হয় সেখান থেকে ত্বকে হালকা পিগমেন্টেশন শুরু হয়।

সার্বজনীনঃ এটি একটি বিরল প্রকৃতির ভিটিলিগো যেখানে সারা শরীরের ত্বকের প্রায় ৮০% অঞ্চলে রঞ্জক পদার্থ থাকে না।

শ্বেতির চিকিৎসা

সত্যি বলতে শ্বেতির কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। আসল কথা হল এর চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কারণ শ্বেতি থেকে জীবন হানি ঘটার সম্ভাবনা একেবারেই নেই বললে চলে। তবে কর্টিকোস্টেরয়েড, টপিকাল জানুস কিনেস ইনহিবিটরস (রাক্সোলিটিনিব), ক্যালসিনুরিন ইনহিবিটরস জাতীয় কিছু ওষুধ রয়েছে যা পিগমেন্টেশন হ্রাসের গতি কমিয়ে দিতে পারে। যদি এটা ঠোঁট এবং নখের ডগা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় সেক্ষেত্রে অটোলোগাস মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লান্ট করা যেতে পারে।গুরুতর সমস্যার ক্ষেত্রে হাল আমলে স্কিন গ্রাফটিং চালু হয়েছে। আর মানসিক ভাবে আহত হলে কাউন্সিলিং করাতে পারেন।

এগুলি ছাড়াও বর্তমানে শ্বেতির চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকটি থেরাপি রয়েছে সেগুলি সম্পর্কে এবার জেনে রাখুন-

আলোক থেরাপি বা ফটোথেরাপি- এটি হল এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি যা আপনার ত্বকে রঙ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।এক্ষেত্রে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির- বি (টঠই) লাইট বা আপনার ত্বকে নির্দেশিত মেডিকেল-গ্রেড লেজারগুলি অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। আপনার ত্বকের ওপর এর ফলাফল বোঝার জন্য আপনাকে বেশ কয়েকটি ফটোথেরাপি সেশন নিতে হতে পারে। মুখে খাওয়ার ওষুধ এবং আল্ট্রাভায়োলেট এ লাইট (চটঠঅ) একত্রিত করে ত্বকের বড় অংশে ভিটিলিগোর চিকিৎসা করা হয়।এটি মাথা, ঘাড়, গর্দান, উপরের বাহু এবং পায়ের ক্ষেত্রে ভিটিলিগোর চিকিৎসার জন্য কার্যকর।তবে পুরো প্রক্রিয়াটি অবশ্যই বিশষজ্ঞদের পরামর্শ এবং তত্ত্বাবধানে করা উচিত।

ডিপিগমেন্টেশন থেরাপি- এই পদ্ধতিতে ভিটিলিগোতে আক্রান্ত ত্বকের অংশগুলির সাথে মিলিয়ে আপনার ত্বকের স্বাভাবিক রঙকে ফিকে করে সমতা আনার চেষ্টা করা হয়। ডিপিগমেন্টেশন থেরাপিতে মনোবেনজোন ড্রাগ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি আপনার ত্বকের পিগমেন্টেড প্যাচগুলিতে এই ওষুধটি প্রয়োগ করতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে সাদা করে তুলবে যাতে আপনার ত্বকের অংশগুলি ভিটিলিগোর সাথে মেলে।

স্কিন গ্রাফটিং – এই চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে আপনার শরীরের এক অংশ থেকে চামড়া নিয়ে অন্য অংশ ঢেকে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়।ত্বকের সাধারণ দাগ বা সংক্রমণ জনিত প্যাচ এর মাধ্যমে দূর করা যায়।

ব্লিস্টার গ্রাফটিং – এক্ষেত্রে ব্লিস্টারের মাধ্যমে গ্রাফটিং করা হয়। এখন অনেকের মনে এই প্রশ্ন আসে যে, শ্বেতি হলে দুধ পান করা উচিত কিনা?

বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, ভিটামিন এ, সি, ই এবং কে মেলানোসাইটের পরিমান কমাতে সাহায্য করে। দুধে ঐ সকল ভিটামিনগুলি প্রচুর পরিমানে থাকে। এছাড়াও ডিম, পনির, গাজর, দই, চিয়া বীজ, ওটমিল, আদা, তরমুজ, কিউই, পেঁপে, শুকনো ফল এবং সবুজ শাক-সবজি এই তালিকার মধ্যে পড়ে যেগুলি শরীরের মেলানিন কমাতে সাহায্য করে।

ভিটিলিগোর সে অর্থে কোনো প্রতিকার নেই কিন্তু আপনি যদি চিকিৎসা নিতেই চান, তাহলে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী আপনাকে আপনার এবং আপনার ত্বকের জন্য সঠিক চিকিৎসা বেছে নিতে সাহায্য করবেন।

সবশেষে যেটা বলার, ভিটিলিগো বা শ্বেতি কোনো স্বাস্থ্যহানিকারক জটিল রোগ নয়।এটি কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়।এর সাথে কুষ্ঠ রোগের কোনো প্রকার সম্পর্ক নেই।এটি শারীরিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে না।একজন শ্বেতি রোগী অনায়াসে স্বাভাবিক জীবনযাপনের যোগ্য। তাই অযথা রটে থাকা সামাজিক কুসংস্কার ও আত্ম সংকোচবোধ ঝেড়ে ফেলুন ও আত্মবিশ্বাসের সাথে আনন্দে স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করুন।

তবে যেকোনো চিকিৎসা পদ্ধতিই একজন অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ মেনে প্রয়োগ করা উচিত।

শ্বেতির প্রতিরোধের উপায়

যেহেতু শ্বেতির বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, তাই এটি প্রতিরোধ করার কোন সুনির্দিষ্ট উপায় প্রায় নেই বললেই চলে।তবে আপনি ভিটিলিগো বা শ্বেতি হওয়ার ঝুঁকি যেভাবে কমাতে পারেন তা হল-

নিরাপদে সূর্যের আলো শরীরে লাগান। প্রতিদিন একটি ভাল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন এবং আপনার ত্বকের যত্ন নিন। শরীরে অতিরিক্ত চাপ এবং আঘাত এড়িয়ে চলুন।

সতর্কতা : তবে দীর্ঘসময় ত্বক ভেজা থাকলে শ্বেতি ফিরে আসতে পারে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশও শ্বেতির একটি কারণ। এজন্য ঘামে ভেজা কাপড় বেশিক্ষণ পরে থাকা যাবে না। বাইরে থেকে এসে কাপড় খুলে বাতাসে মেলে দিতে হবে।

যারা দীর্ঘসময় পানি নিয়ে কাজ করেন, বিশেষ করে গৃহিনীরা কাজ শেষে হাত মুছে ফেলা উচিৎ। হাতের ও পায়ের আঙুলের ফাঁকগুলো যাতে ভেজা না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 

পদ্মা সেতুর সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি বাবদ ৩১৪ কোটি টাকা পরিশোধ
Prev Post পদ্মা সেতুর সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি বাবদ ৩১৪ কোটি টাকা পরিশোধ
মাটির পাত্রে পানি পানের যত উপকারিতা
Next Post মাটির পাত্রে পানি পানের যত উপকারিতা

Leave a Comment:

Your email address will not be published. Required fields are marked *