লাইফস্টাইল ডেস্ক :
হাঁপানি মূলত একটি দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা। এক্ষেত্রে শ্বাসনালিতে প্রদাহ দেখা দেয় ও নালি সংকীর্ণ হয়ে যায়। ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, বুকে শক্ত হয়ে যাওয়া ও তীব্র শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
হাঁপানি আছে বলে অনেকেই শরীরচর্চা এড়িয়ে চলেন। ব্যায়াম করলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে ভেবেই মূলত শরীরচর্চা থেকে দূরে থাকেন। কিন্তু এই ধারণা কি আদৌ ঠিক? এটা ঠিক যে, হাঁপানি থাকলে কোনও শরীরচর্চা করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। নিজে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, হাঁপানির সমস্যা থাকলে কোনও শরীরচর্চা করাই যাবে না, এমন নয়। কিছু শরীরচর্চা আছে যেগুলি নিয়মিত করলে সত্যিই উপকার পাওয়া যায়। শরীরচর্চা করলে শুধু হাঁপানি নয়, সে সঙ্গে ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে। শ্বাস নেওয়ার সমস্যাও অনেকটা কমে শরীরচর্চার অভ্যাসে।
হাঁপানি থাকলেও শরীরচর্চা করতে পারেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু কী ধরনের শরীরচর্চা করছেন, সেটা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। দৌড়নো, বাস্কেটবল কিংবা ওজন তোলার মতো শরীরচর্চা কিন্তু হাঁপানির সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে হাঁটাচলা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, যোগাসন করার মতো শরীরচর্চা কিন্তু করতে পারেন। তাতে অসুবিধা হবে না। বরং এই ধরনের ক্রিয়াকলাপে শরীর সুস্থ থাকবে।
প্রতিদিন ব্রিদিং এক্সারসাইজ
প্রতিদিন ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা জরুরি। দিনের অল্প একটু সময় বের করে নিন। ব্রিদিং ব্যায়াম নিয়মিত অভ্যাস করলে ফুসফুসে বাতাস ঢোকা এবং বার করার পরিমাণ বাড়ে। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
ভুজঙ্গাসান
ম্যাটে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতের তালু মেঝের ওপর ভর দিয়ে পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। এবার কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা আস্তে আস্তে ওপরের দিকে তুলুন। তারপর মাথা বেঁকিয়ে ওপরের দিকে তাকান। এই পশ্চারে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর আগের অবস্থায় ফিরে যান। প্রথমে এই আসন তিন বার করুন। নিয়মিত করলে উপকার পাবেন।
প্রাণায়াম
হাঁপানির রোগীদের জন্য প্রাণায়াম উপকারী। আরামদায়ক কোনও একটি আসনের ভঙ্গিতে বসুন, তা পদ্মাসন, বজ্রাসন বা সুখাসনও হতে পারে। মাথা ও মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হবে। চোখ বুজে আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে হবে গোটা শরীর। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিন। শ্বাস ছাড়ার সময় পেটের পেশীর উপর চাপ দিতে হবে। দ্রুত শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হয়। সবে সবে শুরু করলে প্রতি দশ বারে একটি সেট করুন। পাঁচটি সেটে সম্পূর্ণ হয় এই প্রাণায়ামের অভ্যাস।
অনুলোম-বিলোম
শ্বাসের সমস্যা কমাতে পারে অনুলোম-বিলোম। প্রথমে ডান দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, বাঁ দিক দিয়ে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার কাজ করতে হবে। পরে বাঁ দিকের নাকের ছিদ্র চেপে ধরে, ডান দিক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ ও বর্জনের অভ্যাস করতে হবে। এই প্রাণায়ামে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হবে হবে তিন ধাপে।